ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ সবসময়ই উত্তেজনায় ভরা থাকে। তবে এবারের এশিয়া কাপে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই ক্রিকেট ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ল রাজনীতি ও প্রতিবাদের আবহে। টসে দুই অধিনায়ক হাত মেলালেন না, ম্যাচ শেষে দুই দলের ক্রিকেটারদের করমর্দনও হলো না। এর প্রতিবাদে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বয়কট করলেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আলি আগা। অন্যদিকে ভারতীয় অধিনায়ক সুরিয়াকুমার যাদব সেই মঞ্চেই তুললেন কাশ্মীরের পেহেলগাম হামলার প্রসঙ্গ, জয় উৎসর্গ করলেন ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে।
মাঠের ক্রিকেটে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারালেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল হাত না মেলানো। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের আচরণ নিয়েও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
ঘটনার শুরু টসের সময় থেকেই। দুই অধিনায়ক করমর্দন না করায় সেটি নিয়ে পুরো ম্যাচজুড়ে আলোচনা চলে। পরে ম্যাচ শেষে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। ভারতের জয়ের পর ছক্কায় ম্যাচ শেষ করা সুরিয়াকুমার সরাসরি চলে যান ড্রেসিং রুমে। পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা করমর্দনের জন্য অপেক্ষা করলেও ভারতীয় দলের সাড়া মেলেনি।
প্রতিবাদ জানিয়ে পুরস্কার বিতরণী আয়োজনে যাননি পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আগা। সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের কোচ মাইক হেসন বলেন, “খেলা শেষে আমরা হাত মেলাতে প্রস্তুত ছিলাম। হতাশার বিষয়, প্রতিপক্ষ দল করমর্দন করতে আসেনি। আমরা এগিয়েই গিয়েছিলাম, কিন্তু তারা তখন ড্রেসিং রুমে।”
অন্যদিকে ভারতীয় অধিনায়ক সুরিয়াকুমার পুরস্কার বিতরণীতে মঞ্চে বক্তব্য রাখেন পেহেলগাম হামলা নিয়ে। তিনি বলেন, “পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়া পরিবারগুলোর পাশে আছি আমরা। এই জয় উৎসর্গ করতে চাই সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি, যারা সাহসিকতার নজির রেখে যাচ্ছেন।”
পরে সংবাদ সম্মেলনে সুরিয়াকুমার স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হাত না মেলানোর সিদ্ধান্ত ছিল পরিকল্পিত। “আমাদের সরকার ও বিসিসিআই একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এখানে শুধু খেলতে এসেছি। করমর্দন না করে উপযুক্ত জবাব দিয়েছি।”
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট টসের সময় দুই অধিনায়ককে হাত না মেলানোর অনুরোধ করেছিলেন। ম্যানেজার নাভিদ আকরাম চিমা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
সব মিলিয়ে ম্যাচ শেষে ক্রিকেটের জয়–পরাজয়ের চেয়ে বেশি আলোচনায় উঠে এসেছে হাত না মেলানো, পেহেলগাম হামলা আর প্রতিবাদ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এশিয়া কাপের এই ম্যাচ ইতিহাসে নজিরবিহীনভাবে ক্রিকেটকে ছাড়িয়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক রূপ পেয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক