বাংলাদেশ, ভারত, চীন, মেক্সিকো, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রের ট্যুরিস্ট/বিজনেস ভিসার ফি বাড়ছে। বর্তমানে যে ফি দিতে হচ্ছে তার সাথে আরও ২৫০ ডলার যোগ হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশিদের জন্যে ১ অক্টোবর থেকে নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা ফি লাগবে ৪৩৫ ডলার তথা ৫২২০০ টাকা।
এছাড়া অনলাইনে (ইলেক্ট্রনিক সিস্টেম ফর ট্র্যাভেল অথরাইজেশন) আবেদনের জন্যে বর্তমানের ২১ ডলার ফি থেকে বেড়ে ৪০ ডলার হবে। তবে অস্ট্রেলিয়া, চিলি, ফ্রান্স, কাতার, সিঙ্গাপুরসহ ৪০টি দেশের নাগরিকদের জন্যে এখনকার মতো নতুনবিধি কার্যকর হলেও লাগবে না ভিসা ফি।
চলতি মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্বাক্ষরিত ‘বিল বিউটিফুল বিল’টি আইনে পরিণত হওয়ায় আরও অনেক সেক্টরের মতো ট্যুরিজম সেক্টরেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ‘ভিসা ইনট্যাগরিটি ফি’ আরোপে। এই বিধির পরিপ্রেক্ষিতে ২০৩৪ সালের মধ্যে নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা ফি বাবদ ২৮.৯ বিলিয়ন ডলার আয় হবে বলে কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস আশা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইনকে ঢেলে সাজানোর অভিপ্রায়ে ফি বৃদ্ধিকে যুক্তিযুক্ত মনে করছে ট্রাম্প প্রশাসন।
অপরদিকে, ইউএস ট্র্র্যাভেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট জিয়োফ ফ্রিম্যান বলেছেন, এর ফলে ট্যুরিস্টের আগমনে ভাটা পড়তে পারে। যার কুফল আসতে পারে অর্থনৈতিক সেক্টরে। ফ্রিম্যানের মতে, ট্যুরিস্টরা যুক্তরাষ্ট্রে এসে হোটেল-মোটেলে যে অর্থ ব্যয় করতেন, নতুনবিধি কার্যকর হলে তাতে কিছুটা ভাটা পড়বে। কারণ, ভিসা ফি-তে বাড়তি ব্যয়ের ব্যাপারটি সমন্বয় করবেন অনেক ট্যুরিস্ট। ফ্রিম্যান অবশ্য উল্লেখ করেছেন যে, বাড়তি অর্থ সরাসরি ফেডারেল সরকারের কাছে জমা হবে। জানা গেছে, ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রেও এই বাড়তি ফি কার্যকর হবে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের প্রথম ৬ মাসের তুলনায় এ বছরের একই সময়ে ট্যুরিস্ট আগমনের হার কমেছে ৩.৪%। কেবলমাত্র এবারের জুনেই কমেছে ৫%। করোনার আগে বার্ষিক গড়ে ৭৯ মিলিয়ন (৭ কোটি ৯০ লাখ) ট্যুরিস্ট এসেছে যুক্তরাষ্ট্রে। সে ক্ষেত্রে গত বছর এসেছিল ৭২ মিলিয়ন তথা ৭ কোটি ২০ লাখ। তবে এর ৪৫% ট্যুরিস্ট এসেছেন ভিসা ফি লাগে না দেশসমূহ থেকে।
আরও জানা গেছে, আন্তর্জাতিক ট্যুরিজম নিয়ে কর্মরত ‘ব্র্যান্ড ইউএসএ’ ২০২৬ অর্থ বছরের জন্যে ফেডারেল মঞ্জুরি বর্তমানের চেয়ে ৮০ মিলিয়ন ডলার কম পাবে বলে তারা জানিয়েছে। ট্রাম্পের এই নতুন বিধির পরিপ্রেক্ষিতে ট্যুরিজম সেক্টরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন ফ্রিম্যান। আসছে গ্রীষ্মে কানাডা ও মেক্সিকোর বিভিন্ন সিটিসহ যুক্তরাষ্ট্রে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপের আসরেও বিদেশি ক্রীড়ামোদীর আগমন কমতে পারে।
এছাড়া ২০২৮ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে সামার অলিম্পিকেও এর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সামনের বছর যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা বার্ষিকীর আড়াই শত বছর পূর্তি উপলক্ষে গৃহীত নানা অনুষ্ঠানেও ট্যুরিস্টদের আগমন কমতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এসব বিষয়ে রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যানদের একটি অংশ ইতিমধ্যেই হোয়াইট হাউসের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই