তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ে অনিয়ম, গঠনতন্ত্রে অসঙ্গতি ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) ফের অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন নথিপত্র পর্যালোচনা করেছে দুদকের একটি দল। গত এপ্রিলেও দুই দফায় বিসিবিতে অভিযান চালিয়েছে সংস্থাটি।
প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন বিভাগ থেকে নথিপত্র সংগ্রহ করে কিছু অসঙ্গতি পাওয়ার কথা বলেন দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, আরও লম্বা সময় ধরে চলতে পারে এই প্রক্রিয়া। তিনি বলেন, তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ে অনিয়ম এবং বিসিবির গঠনতন্ত্র এবং অন্যান্য আর্থিক অথবা বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের সার্বিক অভিযোগ নিয়ে আমরা এবার অভিযান চালিয়েছি। এসব অভিযোগের আলোকে বিভিন্ন রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করেছি। সেগুলো সকাল থেকে পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছি। আরও কিছু রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করার পর কিছু বক্তব্য নেব আমরা।
বিসিবিতে প্রথম দিনের অভিযানের পর তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ের নিবন্ধন ফি বাড়ানোসহ কিছু নতুন নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন দুদকের সদস্যরা। মাসখানেক পর একই কথা বললেন তারা।
রাজু আহমেদ বলেন, তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ে অংশগ্রহণ এক সময় খুব সহজ ছিল। কিন্তু ২০২২ সাল থেকে দেখা যায় কিছু প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে। এই ইস্যুটা কতটুকু স্পষ্ট বা স্বচ্ছ কি না, এর বৈধতা কেমন, বাছাই প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়ম ছিল কি না-সেটা দেখলাম।
এ ছাড়া বিসিবির গঠনতন্ত্রের বৈধতা নিয়েও তথ্য যাচাইবাছাই করার কথা বলেন দুদকের সহকারী পরিচালক। তিনি বলেন, বিসিবির গঠনতন্ত্র কতটুকু বৈধ বা সিদ্ধ, সেগুলো পর্যালোচনা করেছি। আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল যে, গঠনতন্ত্রে কিছু অসঙ্গতি আছে। এ বিষয়ে আদালতের একটা রায় ছিল, সেই আলোকে সংশোধিত হয়ে গঠনতন্ত্র পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিসিবি একটি সুসংগঠিত কাঠামোবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে তৈরি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই জায়গায় আমরা গ্যাপ দেখেছি। এখানে চাকরির সঠিক নীতিমালা নেই। এ বিষয়টা আমরা আরও পর্যালোচনা করতে চাই। দেখতে চাই, আদতে এ ব্যাপারটি কেমন? ভবিষ্যতে কী পরিকল্পনা আছে, বিগত সময়ে কেন তৈরি করা হয়নি, সেই বিষয়গুলো আমরা যাচাইবাছাই করব।
দুদকের অভিযানের মাঝপথে বিসিবি কার্যালয়ে আসেন বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ। রাজু আহমেদ জানান, বিসিবির এফডিআরের অর্থ বিভিন্ন ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা ও আর্থিক অনিয়ম নিয়ে ফারুক আহমেদের সঙ্গে কথা বলবেন তারা।
গত মাসের শেষ দিকে দ্বিতীয় অভিযানের পর বিসিবির কাছে ২৭টি আলাদা অভিযোগের বিষয়ে বিভিন্ন নথিপত্র চেয়েছিল দুদক। গতকাল অভিযান পরিচালনা করতে আসা রাজু জানিয়েছেন, সেই বিষয়গুলো দুদকের আরেকটি দল দেখভাল করছে।