স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না রাখা। উন্মুক্ত রাখা যেন দলমত নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করতে পারে। বিশেষ করে যুবকরা যেন এসব নির্বাচনে অংশ নেয়। কেননা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে যুবকরা সময়োপযোগী চিন্তা ও প্রদক্ষে নিতে পারবে। প্রতীক থাকলে দলীয় নেতা, স্থানীয় সংসদ সদস্যের শক্তি কাজ করবে। নির্বাচনে তাদের মার্সেল পাওয়ার খাটাবে। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হতে হবে। কেননা অবৈধ ক্ষমতার ব্যবহার, মার্সেল পাওয়ার দেখানো ও দুর্নীতির কালো টাকা বিতরণের সুযোগ থাকবে না।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে গভার্নেন্স এডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত রাজনৈতিক দলসমূহের সাথে ‘গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ ও জনআকাঙ্ক্ষার আলোকে স্থানীয় সরকার সংস্কার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে রাজনৈতিক নেতারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, জেলা পরিষদের অধীনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করে সকল স্থানীয় সরকারের মতো একটি সমন্বিত ও শক্তিশালী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান গঠন করতে হবে। সকল স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহিতার ব্যবস্থাসহ ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব বৃদ্ধি এবং নারীদের জন্য ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
সভায় স্থানীয় সরকার সংস্কার বিষয়ে ফোরামের বক্তব্য উপস্থাপন করেন গভার্নেন্স এডভোকেসি ফোরামের সমন্বয়কারী ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী।
গভার্নেন্স এডভোকেসি ফোরামের সদস্য ও এনআরডিএস’র নির্বাহী পরিচালক আবদুল আউয়ালের সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা প্রমুখ।
রাশেদা বেগম হীরা বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় আমলাদের প্রভু মনে না করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের গুরুত্ব দিতে হবে আগে। ফলে জেলা পরিষদের অধীনে জেলা প্রশাসককে কাজ করার বিষয়টি দেরিতে হলেও বাস্তবায়ন হওয়া দরকার। সাম্যতার ভিত্তিতে নারীদের জন্য স্থানীয় সরকারেও অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ঔপনিবেশিক সংস্কৃতি থেকে আমরা এখনও বের হতে পারিনি। ফলে ডিসি, ইউএনওদেরকে আমরা স্যার ডাকি। আমাদের দলের পক্ষ থেকে যে ১৬ দফা সুপারিশ দেয়া হয়েছে কমিশনের কাছে সেখানেও জেলা পরিষদকে শক্তিশালী করার কথা বলেছি আমরা। প্রতীক ও দলীয় নির্বাচন থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। কেননা যে দল ক্ষমতায় থাকে সে দলের সংসদ সদস্যের প্রভাব, নেতাদের মার্সেল পাওয়ার ও কালো টাকা বিতরণের সুযোগ থাকে। শুধু এখনই নয়, সব সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন।
গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি বলেন, ক্ষমতার দিক থেকে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে কতটুকু এগিয়ে নেয়া যায় সেটিই এখন ভাবার বিষয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত