স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, কোনোভাবেই সিভিল ড্রেসে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। ইউনিফর্মে থাকতে হবে, অথবা ভেস্ট পরা থাকতে হবে’।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও তেলবাজির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, পুলিশে ভর্তি ও বদলিতে বাণিজ্য (দুর্নীতি) এখন অনেক কমেছে। কোনো এসপি বলতে পারবে না আমি কারো জন্য তাদের কাছে রিকুয়েস্ট করেছি।
এখন পুলিশের সব বদলি একটি কমিটির মাধ্যমে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের সংখ্যা বেড়ে যায়, যাদের অনেককে আমি চিনিও না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বন্ধু বা আত্মীয় পরিচয়ে আপনাদের কাছে কেউ গেলে প্রথম দিন চা খাওয়াবেন, দ্বিতীয় দিন গেলে পুলিশে ধরিয়ে দেবেন।
তিনি আরও বলেন, থানার ওসি বদলির রিকুয়েস্ট বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। ওসি বদলির এতো রিকুয়েস্ট থাকে যে, তারা ভাবে ওসিই বুঝি তাদের পার করে দেবে। জনগণ তাদের পার করবে কিনা এইটা চিন্তায় নেই।
মতবিনিময়ে উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাদের লেভেলে এটা (তেলবাজি) হয় না, কিন্তু উপরের লেবেলে খুব বেশি হচ্ছে’।
তেলবাজি বন্ধ করা দরকার উল্লেখ করে উপস্থিত দুই সচিবকে উদ্দেশ্য করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আপনারা অন্য অফিসারদের এ বিষয়ে বলবেন। এ নিয়ে আমরাও অনেক সময় অস্বস্তিতে পড়ি।
উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, আমরা অরাজনৈতিক সরকার। আমাদের সাথে কাজ করতে আপনাদের অনেক সুবিধা। আমরা অনেক ক্ষেত্রেই ‘না’ বলতে পারি। রাজনৈতিক সরকার তা পারে না।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা এখন মাদক। আপনারা বলছেন যে ডিভিশনাল হেড কোয়ার্টারে মাদক নিরাময় কেন্দ্র করতে হবে। নিরাময় কেন্দ্র করব না, মাদক যাতে না আসে, না খায়... সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আপনারা ১৫ হাজার ফেনসিডিল ছেড়ে দিয়ে ৫০০ ফেনসিডিল জমা দিয়ে দেন। এগুলো যেন না হয়। আমি ছাড়ব না, চাকরি কিন্তু সাথে সাথে চলে যাবে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, যশোর সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল জেএম ইমদাদুল ইসলাম, খুলনা বিভাগের ডিআইজি রেজাউল হক, জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার রওনক জাহান উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/কেএ