সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর সোমবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের তুলনা করেছেন নাৎসি জার্মানির সঙ্গে। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক একটি বক্তব্যে তিনি ট্রাম্পের ক্ষমতার ব্যবহার নিয়ে গুরুতর সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন।
সান ফ্রান্সিসকোর ‘ক্লাইমেট উইক’-এর উদ্বোধনী আয়োজনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে গোর বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন তাদের কাঙ্ক্ষিত বাস্তবতা তৈরি করতে চায়। হিটলারের নাৎসি পার্টি ১৯৩০ ও ৪০-এর দশকে তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য যেমনটা করেছিল।”
গোর বলেন, “আমি খুব ভালো করেই বুঝি, অ্যাডলফ হিটলারের থার্ড রাইখের সঙ্গে অন্য কোনও আন্দোলনের তুলনা করা কতটা অনুচিত। সেটা ছিল নিঃসন্দেহে সবচেয়ে নিন্দনীয়। কিন্তু সেই ইতিহাস থেকে আমাদের শেখার অনেক কিছু আছে।”
আল গোর তার বক্তব্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের জার্মান দার্শনিকদের ‘নৈতিক বিশ্লেষণ’ উল্লেখ করে বলেন, “জার্মান দার্শনিক ইয়ুর্গেন হাবারমাসের শিক্ষক থিওডর অ্যাডোর্নো লিখেছিলেন, একটি জাতির নরকে পতনের প্রথম ধাপ ছিল—সত্য ও মিথ্যার পার্থক্যকে ক্ষমতার প্রশ্নে রূপান্তর করা। ট্রাম্প প্রশাসন সত্য ও মিথ্যার মূল পার্থক্যকে আঘাত করছে এবং নিজেদের কাঙ্ক্ষিত বাস্তবতাই প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।”
তিনি আরও বলেন, “ক্ষমতা দখলই মূল বিষয়। আমাদের সংবিধান সেই একই ধরনের হুমকি থেকে আমাদের রক্ষা করতেই তৈরি হয়েছিল যে ধরনের হুমকিম এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প দিচ্ছেন।”
হোয়াইট হাউস গোরের এই বক্তব্যের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির একাধিক শীর্ষ নেতা ও সাবেক কর্মকর্তারা যখন সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনায় মুখর হয়েছেন ঠিক এমন সময়েই এল আল গোরের এই মন্তব্য।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সম্প্রতি এক ভাষণে বলেন, “মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চর্চাকারী ছাত্রদের তথ্য না দিলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে হুমকি দিচ্ছে এরকম এক ফেডারেল সরকার নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”
তিনি যোগ করেন, ট্রাম্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবোধগুলো ক্ষয়ে গেছে।
সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন অসাংবিধানিক পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং তারা জনগণের মাঝে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক নিবন্ধে লেখেন, ট্রাম্প আমেরিকার শক্তি অপচয় করছেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছেন। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, পলিটিকো
বিডি প্রতিদিন/একেএ