বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকারের জন্য বিএনপি নির্বাচন চায়। এখনো ৯০ শতাংশ আমলা আওয়ামী ফ্যাসিস্টের দোসর। ১০ বছর ধরে যদি সংস্কার চলে, তাহলে কি দীর্ঘকাল ফ্যাসিবাদের দোসর আমলাদের দিয়ে দেশ চলবে? ফ্যাসিস্ট আমলাদের নিয়ে দেশ চলতে পারে না। তাহলে কী ১০ বছর পরে নির্বাচন হবে? অনির্দিষ্টকালের জন্য অনিশ্চিত অনির্বাচিত সরকার মানুষের জন্য কী উপকারে আসতে পারে?
গতকাল বিকালে সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ জে মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইনজীবী নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, মঙ্গলবার (বিদেশ থেকে আসার দিন) প্রমাণ হয়েছে বেগম খালেদা জিয়া সবচাইতে জনপ্রিয় নেতা। এটাও প্রমাণ হয়েছে বিএনপির হাতেই দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র নিরাপদ। এমন সরকার করতে চাই যাতে জনগণের সমস্যা সমাধান করা যায়। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আমরা লড়ছি। আমাদের লড়াইয়ের মূল বিষয় গণতন্ত্রের সংস্কার। দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা তা এখনো অর্জন করতে পারিনি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে গণতন্ত্র ফিরে পাওয়া অনিশ্চিত। তিনি বলেন, সবার মধ্যে এখন শান্তিভাব চলে আসছে। তারা ভাবছেন হাসিনা তো চলে গেছে। কিন্তু রাজনীতিবিদ হিসেবে আমার মনে হয়, আমরা এখন সবচেয়ে ভঙ্গুর অবস্থানে আছি। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন নতুন নতুন তত্ত্ব হাজির করা হচ্ছে, সময় নেওয়া হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেশকে ভঙ্গুর অবস্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে- আমরা মনে হয় সংস্কারবিরোধী। অথচ সংস্কারের শুরুটাই করেছি আমরা। অনেকে বলেন বিএনপি শুধু ক্ষমতা চায়। হ্যাঁ, আমরা ক্ষমতা চাই, ক্ষমতার জন্যই রাজনীতি করি। আমাদের গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে জনগণের ভোটের মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে চাই।
দেশের অর্থনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার অর্থনীতির জন্য কী করেছে? অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, আগামীতে আরও হবে। বিনিয়োগ আসছে না। বিদেশিরা বলছে, নির্বাচিত সরকার ছাড়া তারা বিনিয়োগ করবে না। মুদ্রাস্ফীতি কমছে না। যারা এতদিন ব্যবসা করতে পারেনি, তাদের জন্য সরকার কিছু করেনি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য চায়। কিন্তু এমন কিছু করবেন না যাতে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাউকে না জানিয়ে করিডোর দেওয়া হচ্ছে। যেখানে আরাকান আর্মির কোনো সরকারই নেই। যদি দেওয়ার প্রয়োজন হয় দেওয়া হবে। আমরা মানবতার পক্ষে। তবে তা রাজনৈতিক দল এবং দেশের জনগণকে নিয়ে দেওয়া হবে। দেশ-গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা কখনোই বাধা হব না। বরং সামনে এসে দাঁড়াব। দেশের মানুষের পক্ষে যায় না এমন কিছু কোনোদিনও করা যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন মির্জা ফখরুল।