জুলাই বিপ্লবে গুরুতর আহতদের মধ্যে চলতি মাসের মধ্যে আরও ১৯ জনকে বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই চোখে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদেরকে বিদেশে চিকিৎসাসেবা পাওয়া নিশ্চিত করবে সরকার। এর আগে ৩৯ জন গুরুতর আহত রোগীকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়। কয়েকজন এরই মধ্যে চিকিৎসাসেবা নিয়ে দেশে ফিরেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মাসিক সভার বিবরণীতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ৩৯ জনের মধ্যে থাইল্যান্ডে ২৪ জন ও সিঙ্গাপুরে ১৪ জনকে পাঠানো হয়েছে। একজনকে পাঠানো হয়েছে রাশিয়াতে।
জুলাই বিপ্লবে গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ভিসা ও বিদেশে পাঠানো প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জুলাই বিপ্লবে আহতদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জুলাই বিপ্লবে আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে অন্তর্বর্তী সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমে তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে বর্তমান সরকার খুবই সিরিয়াস। আমি পুনরায় নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে, যত দিন পর্যন্ত তাদের সাপোর্ট প্রয়োজন পড়বে, সরকার তা দিতে বদ্ধপরিকর। একই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানান, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে আহতদের বিদেশে চিকিৎসায় প্রায় ১৯ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। জুলাই ফাউন্ডেশন আহতদের কিছু অর্থসহায়তা দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় যারা শহীদ হয়েছে তাদেরকে ৩০ লাখ টাকা করে দিচ্ছে। এর সঙ্গে চিকিৎসার কোনো সম্পর্ক নেই। চিকিৎসার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তাদের দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে ২৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছিলাম। সেখান থেকে আমাদের প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বাকি টাকাটা আমাদের কাছে আছে। তা জুলাইয়ে আহতদের মধ্যে আরও যাদের বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন হবে তাদের পেছনে খরচ করা হবে। এদিকে জুলাই বিপ্লবের সময় আহত ব্যক্তিদের বিদেশে চিকিৎসার জন্য অর্থ ছাড়ের সীমা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিদেশে চিকিৎসার উদ্দেশে যাওয়া একজন ভ্রমণকারীর জন্য ব্যাংক সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার ছাড় করতে পারলেও ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের জন্য এই সীমা শিথিল থাকবে। অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য প্রাক্কলন অনুযায়ী বিদেশি মুদ্রা ছাড় করা যাবে। ব্যাংক চ্যানেলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কার্ডের মাধ্যমেও এই অর্থ ছাড় করা যাবে। ২০১৮ সালের বিদেশি মুদ্রা লেনদেন গাইডলাইন অনুযায়ী, বিদেশে চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার বা তার সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা ছাড় করতে পারেন অনুমোদিত ডিলাররা। বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, এই গাইডলাইনের অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।