ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন দল নিবন্ধনে মার্চে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২০ এপ্রিলের মধ্যে আগ্রহীদের আবেদন করতে বলেছে কমিশন। এদিকে আবেদনের মাত্র ৯ দিন বাকি থাকলেও নিবন্ধন পেতে হাতে গোনা কয়েকটি দল আবেদন করেছে। তবে বিগত বিভিন্ন নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেতে দলগুলোর ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেলেও এবারে তেমন কোনো সাড়া মিলছে না। অনেক দল বলছে, নিবন্ধন আবেদনের সময় সীমানা বাড়াতে তারা ইসির কাছে আবেদন করবে। ইসির নিবন্ধন পেতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ৯৩টি রাজনৈতিক দল আবেদন করেছিল। তবে এবার যেহেতু ডিসেম্বরকে টার্গেট করে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি, তাই সব কার্যক্রম আগস্টের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সংস্থাটি।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে। তফসিল ঘোষণার ১০-২০ দিন আগেই কেউ নিবন্ধন চাইলে দেওয়া সম্ভব হবে না। দলের নিবন্ধন গেজেট প্রকাশ তফসিল ঘোষণার আগেই শেষ করতে হবে। এজন্য আমাদের টার্গেট রয়েছে জুলাই-আগস্টের মধ্যে এটা শেষ করার।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, অতীতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার সময় বাড়ানোর নজির রয়েছে। ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০২২ সালের ২৬ মে আবেদন আহ্বান করে সে বছরের ২৯ আগস্ট পর্যন্ত সময় দিয়েছিল তৎকালীন কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। তবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সিইসিকে সময় বাড়ানোর অনুরোধ করলে দুই মাস সময় বাড়ানো হয়েছিল।
এদিকে গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টিকে নিবন্ধন সনদ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টিকে (বিএমজেপি) নিবন্ধন দিতে ইসিকে নির্দেশ দেন হাই কোর্ট। এ ছাড়া গণ অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ এম এম নাসির উদ্দীন নেতৃত্বাধীন ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর আদালতের আদেশে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির পর বিএমজেপি নিবন্ধন পেল। এ পর্যন্ত ৫৫টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরবর্তীতে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের (জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা) নিবন্ধন বাতিল করা হয়। ফলে দেশের এখন পর্যন্ত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০টিতে। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়।
জাগপাও ফিরছে : জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপাকে নিবন্ধন দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন ঝুঁকিতে পড়ে দলটির। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) নিবন্ধন বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করে। নিবন্ধন বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সে বছরই হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন দলটির সভাপতি তাসমিয়া প্রধান। গেল মার্চে দলটিকে নিবন্ধন দেওয়ার আদেশ দেন আদালত।