‘সুখ’ কমছে বাংলাদেশে! সুখী দেশের তালিকায় পাঁচ ধাপ পিছিয়ে গেল দেশ। ১২৯তম থেকে এখন বাংলাদেশ ১৩৪তম স্থানে। এ বছর তালিকায় থাকা ১৪৭টি দেশের মধ্যে সবার ওপরে ফিনল্যান্ড, আর শেষে রয়েছে আফগানিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কেবল আফগানিস্তানের অবস্থান বাংলাদেশের পেছনে।
২০১২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ২০ মার্চকে আন্তর্জাতিক সুখ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তার পর থেকে প্রতি বছর জাতিসংঘ ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট প্রকাশ করে আসছে সুখী দেশের এই তালিকা। এর আগে বাংলাদেশ ২০২৩ সালে তালিকায় ১১৮তম এবং ২০২২ সালে ৯৪তম অবস্থানে ছিল। অর্থাৎ টানা চার বছর সুখী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের শুধু অবনমনই হয়েছে। গতকাল প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট’ থেকে এসব তথ্য জানা যায়। এ বছর সুখী দেশের তালিকায় ভারত আছে ১১৮ নম্বরে। ভারতের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে নেপাল (৯২) ও পাকিস্তান (১০৯)। দক্ষিণ এশিয়ার আরও দুই দেশ মিয়ানমার ১২৬তম এবং শ্রীলঙ্কা ১৩৩তম অবস্থানে। ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস প্রতিবেদনে এ বছরও সুখী দেশের তালিকায় টানা অষ্টমবারের মতো শীর্ষে ফিনল্যান্ড। ১৪০টির বেশি দেশ থেকে গ্যালাপ বিশ্ব জরিপের মাধ্যমে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের সর্বশেষ তিন বছর কেমন কেটেছে, তার তথ্য দেন এবং সেই ভিত্তিতে দেশের মানুষের সুখী হওয়ার একটি গড় মূল্যায়ন করা হয়। এবারের প্রতিবেদনের জন্য ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। গ্যালাপ, দ্য অক্সফোর্ড ওয়েলবিং রিসার্চ সেন্টার ও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন সমাধান নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) ও একটি সম্পাদকীয় পরিষদের যৌথ উদ্যোগে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। জরিপে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে তাঁদের সার্বিক জীবন নিয়ে সন্তুষ্টির ওপর নম্বর দিতে বলা হয় এবং জীবন নিয়ে ওই পর্যালোচনার ভিত্তিতে তালিকায় দেশগুলোর অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। জীবন নিয়ে পর্যালোচনায় সহায়তার জন্য প্রতিবেদনে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সূচক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
সূচকগুলো হলো- মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), সামাজিক সহায়তা, সুস্থ জীবনযাপনের প্রত্যাশা, স্বাধীনতা, উদারতা ও দুর্নীতি নিয়ে মনোভাব। গত কয়েক বছরের মতো এবারও সুখী দেশগুলোর তালিকায় নর্ডিক দেশগুলোর আধিপত্য স্পষ্ট। ফিনল্যান্ডের পরই আছে ডেনমার্ক। এরপর আইসল্যান্ড ও সুইডেন। ২০২৪ সালের তালিকাতেও এই চার দেশের অবস্থান এমনই ছিল। আরেক নর্ডিক দেশ নরওয়ে আছে তালিকায় ৭ নম্বরে। গ্যালাপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলানা রন-লেভি বলেন, ‘ফিনল্যান্ডের মতো নর্ডিক দেশগুলোয় সবার জন্য উচ্চমানের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও সামাজিক সহায়তার ব্যবস্থা রয়েছে। ভালো থাকার ক্ষেত্রেও বৈষম্য অনেক কম।’ সুখী দেশের তালিকায় প্রথম দশে আরও স্থান পেয়েছে নেদারল্যান্ডস (৫), ইসরায়েল (৮) ও লুক্সেমবার্গ (৯)। এখন পর্যন্ত তালিকায় এ বছরই সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র। এ বছর দেশটি তালিকায় ২৪ নম্বরে। এ বছর তালিকায় শেষের দিক থেকে আফগানিস্তানের ওপরে আছে যথাক্রমে সিয়েরা লিওন, লেবানন, মালাবি, জিম্বাবুয়ে।