কোরআন মহান আল্লাহর বাণী, জ্ঞানের খনি। কোরআন মানুষকে পরিচালিত করে সঠিক পথে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই এ কোরআন সঠিক পথেরই দিশা দেয়।’ (সুরা : ইসরা, আয়াত : ৯)
তাই মুমিনের উচিত সব কাজে কোরআনকে প্রাধান্য দেওয়া।
যেমন—
কোরআন শিখি সবার আগে : জীবনের প্রভাতবেলার সূচনা হোক কোরআন শিখে। আলিফ-বা-তা অধ্যয়ন হোক শিক্ষার প্রথম সবক। আর তা হোক প্রত্যেক মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের পরিচায়ক। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে কোরআন শিক্ষা করে এবং শিক্ষা দেয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০২৭)
কোরআন পড়ি সবার আগে : কোরআন এক মহান গ্রন্থ, যা বানায় অফুরন্ত সওয়াবের ভাগীদার। এ জন্য প্রতিদিনই কোরআন পড়ি। কোরআন পাঠ প্রথমেই করি এবং শ্রেষ্ঠ ফজিলত অর্জন করি। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআনের একটি হরফ পাঠ করবে, তাকে একটি সওয়াব দেওয়া হবে, যার পরিমাণ হবে ১০টি সওয়াবের সমপরিমাণ।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৯১০)
কোরআন বুঝি সবার আগে : পবিত্র কোরআন এক নিগূঢ় তত্ত্ব-নির্মিত, অলংকারে অলংকৃত, গভীর ভাবসম্পন্ন এবং ভাষা ও সাহিত্যে অতুলনীয় এক মহাগ্রন্থ। এর প্রতিটি আয়াতে লুকিয়ে আছে এমন জ্ঞান, এমন আলো, যা অন্তরকে উদ্ভাসিত করে, চিন্তাশক্তিকে জাগিয়ে তোলে। এ কারণে কোরআন নিয়ে গবেষণা করি। তাতে অধিক সময় ব্যয় করি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তবে কি তারা কোরআন নিয়ে গবেষণা করে না? না কি তাদের অন্তরসমূহ তালাবদ্ধ?’ (সুরা : মুহাম্মাদ, আয়াত : ২৪)
কোরআনে খুঁজি সবার আগে : কোরআন জ্ঞানের আধার।
এ জন্য যেকোনো দ্বিনি বিধান জানতে প্রথমেই কোরআনে খোঁজা আবশ্যক। তারপর সুন্নাহে, তারপর শরিয়তের অন্যান্য উৎস। বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া যায় নিম্নোক্ত হাদিসে। তিনি মুয়াজ (রা.)-কে ইয়েমেনে পাঠানোর পূর্বে জিজ্ঞাসা করলেন, যদি তোমার সামনে বিচার-ফয়সালার কোনো বিষয় আসে, তাহলে তুমি কিভাবে ফয়সালা করবে? মুআজ (রা.) বললেন, আল্লাহর কিতাব (কোরআন) অনুযায়ী ফয়সালা করব। নবীজি (সা.) তখন বললেন, যদি আল্লাহর কিতাবে না পাও? তিনি বললেন, তাহলে সুন্নাহ অনুযায়ী ফয়সালা করব। নবীজি (সা.) আবার জিজ্ঞাসা করলেন, যদি উভয়টির কোনোটিতেই না পাও? মুআজ (রা.) বললেন, তাহলে আমি ইজতিহাদ (গবেষণা) করে ফয়সালা করব এবং কোনোরূপ অবহেলা করব না। কথাটি শুনে নবীজি (সা.) তাঁর বুকের ওপর হাত মেরে বললেন, সব প্রশংসা আল্লাহর, যিনি স্বীয় রাসুলের প্রতিনিধিকে এমন বিষয়ের তাওফিক দিয়েছেন, যা তাঁর রাসুলকে সন্তুষ্ট করে।
(মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২২১০০)
কোরআনের চিকিৎসা সবার আগে : পবিত্র কোরআন আত্মার প্রশান্তি ও রোগমুক্তির এক অমূল্য নিরাময়। তাই রোগব্যাধি, ব্যথা ও জখমে প্রথমেই কোরআনি চিকিৎসা গ্রহণ করি। কোরআন পড়ে আক্রান্ত দেহে ফুঁক দিই। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি কোরআন নাজিল করেছি, যা মুমিনদের জন্য আরোগ্য ও অনুগ্রহস্বরূপ। কিন্তু তা সীমা লঙ্ঘনকারীদের কেবল ক্ষতিই বৃদ্ধি করে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৮২)
আল্লাহ সবাইকে বোঝার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন