নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়ে দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি তিনি শপথ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। এরপর থেকে বিভিন্ন নির্বাহী আদেশ জারি করতে থাকেন। এভাবে গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধ বিশ্বজুড়ে তৈরি করেছে বাণিজ্য অস্থিরতা। এমনকি এর জেরে ইতোমধ্যে জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করেছেন তিনি। হারাচ্ছেন ভোটারদের সমর্থনও। অর্থনীতি এবং অভিবাসন নীতিতে ধাক্কা দেওয়ায় ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করছেন মার্কিনিরা। জরিপের ফলাফল বলছে, জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন করেই ট্রাম্প যে নীতি গ্রহণ করেছে তা অনেক আমেরিকানের কাছেই তাকে অজনপ্রিয় করে তুলছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রিপাবলিকান ভোটারদের বিপুল সমর্থন ধরে রাখতে শুল্ক আরোপ থেকে শুরু করে অভিবাসন দমন অভিযান পর্যন্ত নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন ট্রাম্প। তবে এতে সার্বিক ভোটারদের কাছে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন তিনি। -দ্য স্ট্রেইটস টাইমস
ইকোনমিস্টের জনমতকারী প্রতিষ্ঠান ইউগভ-এর এক জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলোর রেটিং নিম্নগামী। রেটিং পয়েন্ট তালিকায় তাকে বর্তমানে ৪১ শতাংশ আমেরিকান সমর্থনের কথা জানিয়েছে, যা জানুয়ারিতে ছিল ৫০ শতাংশ।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের করা আরেক জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের কার্যক্রমের রেটিং ৪০ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৪৭ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে একই সময়ের মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের রেটিং অনেকটা এগিয়ে ছিল। ২০২১ সালে তার রেটিং ছিল ৫৯ শতাংশ। অর্থাৎ বেশির ভাগ আমেরিকানরাই ট্রাম্পের পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নন। জনমত জরিপকারী প্রতিষ্ঠান গ্যালাপ গত সপ্তাহে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বে ফেরার পর প্রথম তিন মাসে ট্রাম্পের গড় সমর্থনের হার ৪৫ শতাংশ, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত অন্য সব প্রেসিডেন্টের তুলনায় কম। ফলাফলগুলো আরও দেখাচ্ছে যে, অর্থনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ট্রাম্পের পদক্ষেপের ওপর আস্থা হারাচ্ছে মার্কিন জনগণ। ২০২৪ সালের ভোটাররা ৭৮ বছর বয়সি এই ধনকুবেরকে অর্থনীতিতে শক্তিশালী হিসেবে দেখলেও, এপ্রিলে তিনি বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করে বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন। ইউগভ-এর জরিপ অনুযায়ী, এখন প্রায় ৫৪ শতাংশ আমেরিকান মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আগের তুলনায় আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। জানুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ৩৭ শতাংশ। রয়টার্সের জনমতকারী প্রতিষ্ঠান ইপসোস-এর এক জরিপে দেখা গেছে, জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে ট্রাম্পের পদক্ষেপকে সমর্থনের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এ ক্ষেত্রে মাত্র ৩১ শতাংশ আমেরিকান ট্রাম্পের গৃহীত পদক্ষেপে সন্তুষ্ট। নভেম্বরের নির্বাচনে মুদ্রাস্ফীতি ছিল একটি উত্তপ্ত বিষয়, তখন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় এলে দ্রুত দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।