যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের বিরুদ্ধে লাখো মানুষ বিক্ষোভ করেছে। সোমবার (১৮ অক্টোবর) বিভিন্ন শহরে অনুষ্ঠিত শান্তিপূর্ণ ‘নো কিংস’ মিছিলে মার্কিন গণতন্ত্র রক্ষার আহ্বান জানানো হয়।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী পেগি কোল, যিনি মিশিগানের ফ্লিন্ট শহরের বাসিন্দা, ৭০ তম জন্মদিন উদ্যাপন করতে প্রায় ১০ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছে বিক্ষোভে যোগ দেন। কোল বলেন, “এই মুহূর্তটি আমেরিকানদের জন্য ভয়ংকর সময়। আমাদের গণতন্ত্র ক্রমশ ভাঙছে। তাই বিক্ষোভে অংশ নেওয়া আবশ্যক।”
স্থানীয় সময় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে ২ হাজার ৭০০টিরও বেশি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক প্রাক্কলিত সংখ্যা অনুযায়ী প্রায় ৭০ লাখ মানুষ এসব মিছিলে উপস্থিত ছিলেন। শুধু নিউইয়র্কে এক লাখের বেশি মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিল। বড় শহরের র্যালি ছাড়াও ছোট শহর, জনবহুল রাস্তা ও পার্কে ছোট বিক্ষোভ দলগুলো দেখা যায়।
এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মূল কারণ ছিল সাম্প্রতিক অভিবাসন রেইড, ফেডারেল অভিবাসন প্রয়োগের প্রতিবাদ এবং ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন শহরে ফেডারেল সেনা মোতায়েন। দিনশেষে কিছু সংঘাতের ঘটনা ঘটলেও তা খুব সীমিত ছিল। সাউথ ক্যারোলিনায় একজন নারী আগ্নেয়াস্ত্র দেখানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। জর্জিয়ায় এক পুরুষ ভিডিওতে ধরা পড়ে, যে একজন বিক্ষোভকারীর পতাকা ছিনিয়ে নেন এবং অন্যজনকে মাটিতে ঠেলেন।
যদিও ট্রাম্প প্রশাসন এবং কিছু রিপাবলিকান নেতা এসব বিক্ষোভকে ‘হিংস্র কট্টর বামপন্থীর কাজ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন, ‘নো কিংস’ আন্দোলনের আয়োজক ইন্ডিভিজিবল প্রজেক্ট দাবি করেছে, তারা ‘অহিংস আন্দোলনে’ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে।
বিক্ষোভে কিছু অংশগ্রহণকারী হলুদ রঙের পোশাক পরেছেন, যা একতার প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যরা বেলুন, মুরগি, ব্যাঙ এবং ডাইনোসর পোশাক পরে এসেছেন, যা বিক্ষোভের শান্তিপূর্ণ প্রকৃতি ফুটিয়ে তোলে। লস অ্যাঞ্জেলেসের এক বিক্ষোভকারী বলেন, “হ্যালোউইনের পোশাক পরা মানুষদের নাচ দেখা যায়—একে যুদ্ধক্ষেত্র বলা কঠিন।”
বিক্ষোভকারীরা মেগাফোনে চিৎকার করে স্লোগান দেন—‘এটাই গণতন্ত্রের চেহারা’, ‘ঘৃণা নয়, ভয় নয়, অভিবাসীরা এখানে স্বাগত’। তারা আমেরিকান পতাকা হাতে ধরেছেন এবং স্বৈরতান্ত্রিকতা ও বিলিয়নিয়ারদের বিরোধী প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেছেন।
সূত্র: সিএনএন