গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের চলমান গণহত্যামূলক অভিযানে নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজার ২০৮-এ পৌঁছেছে বলে শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৪ জনের মরদেহ বিভিন্ন হাসপাতালে আনা হয়েছে। একই সময়ে আহত হয়েছেন অন্তত ২০০ জন। এর ফলে ইসরাইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ২৭১ জনে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে বা রাস্তায় পড়ে আছেন; উদ্ধারকর্মীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।
গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা করতে গিয়ে আরও চার ফিলিস্তিনি নিহত ও অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন। এ নিয়ে ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরাইলি হামলায় মোট ২ হাজার ৫১৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং অন্তত ১৮ হাজার ৪৪৯ জন আহত হয়েছেন। বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ত্রাণকর্মী বর্তমান ইসরাইলি অনুমোদিত ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থাকে "মৃত্যুফাঁদ" আখ্যা দিয়েছে।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি ও অনাহারে আরও চার ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে একজন শিশু, মারা গেছেন। এর ফলে গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া দুর্ভিক্ষে এ পর্যন্ত ৪৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৪৭ শিশু।
২ মার্চ থেকে গাজার সব সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। ফলে ২৪ লাখ মানুষের এই ভূখণ্ডে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ ইতিমধ্যেই নিশ্চিত হয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষে এর বিস্তার কেন্দ্রীয় দেইর আল-বালাহ ও দক্ষিণের খান ইউনিস পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে বলে সতর্ক করেছে ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি)।
আইপিসি দুর্ভিক্ষ ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত অনাহারে মারা গেছেন ১৬৪ জন, যাদের মধ্যে ৩২ শিশু রয়েছে।
১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলি সেনারা নতুন করে হামলা শুরু করার পর এখন পর্যন্ত আরও ১২ হাজার ৬৫৩ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৫৪ হাজার ২৩০ জন। এতে জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে।
গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলাও চলছে। সূত্র: আনাদোলু
বিডি প্রতিদিন/নাজিম