জাপানে ২০২৪ সালে জন্মহার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৭ লাখের নিচে নেমে এসেছে। দেশটির সরকারের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে মোট ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬১ জন নবজাতকের জন্ম হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪১ হাজার ২২৭ জন কম। ১৮৯৯ সাল থেকে শুরু হওয়া রেকর্ড অনুযায়ী, এটি এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন জন্মসংখ্যা।
বিশ্ব ব্যাংকের তথ্যানুসারে, জাপানে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বয়স্ক জনগোষ্ঠী রয়েছে, যেখানে প্রথম স্থানে রয়েছে ক্ষুদ্র রাষ্ট্র মোনাকো। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এই পরিস্থিতিকে ‘নীরব জরুরি অবস্থা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি জন্মহার বাড়ানোর লক্ষ্যে পরিবারবান্ধব নীতিমালার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে কর্মস্থলে আরো নমনীয় সময়সূচি প্রবর্তন।
জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত বুধবারের পরিসংখ্যানে আরো দেখা গেছে, একজন নারীর গড় সন্তানের সংখ্যা (ফার্টিলিটি রেট) ২০২৪ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ১.১৫-এ, যা এখন পর্যন্ত রেকর্ড সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, ২০২৪ সালে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৬ লাখ, যা আগের বছরের তুলনায় ১.৯ শতাংশ বেশি।
প্রধানমন্ত্রী ইশিবা বলেছেন, গ্রামীণ এলাকাগুলোর পুনর্জাগরণ জরুরি, কারণ সেখানে বয়স্ক জনসংখ্যা কমে এসে সম্পূর্ণ গ্রামগুলো প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ছে। দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জাপানের ২০,০০০টিরও বেশি সম্প্রদায়ে অধিকাংশ বাসিন্দার বয়স ৬৫ বছরের বেশি। ১২.৩ কোটির জনসংখ্যার দেশ জাপান বর্তমানে চরম শ্রমিক সংকটে ভুগছে, যা বয়সজনিত জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি কঠোর অভিবাসন নীতির কারণেও আরো খারাপ হচ্ছে।
প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ার জন্মহার ২০২৪ সালে জাপানের চেয়েও কম, মাত্র ০.৭৫। যদিও বিয়ের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে, তবুও এটি এখনো বিশ্বের অন্যতম সর্বনিম্ন জন্মহার হিসেবে রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জন্মহার বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক ও অর্থনৈতিক নীতিমালা গ্রহণ ছাড়া জাপানের জন্য টেকসই সমাধান আসবে না। সূত্র : এএফপি।
বিডি-প্রতিদিন/শআ