গাজা উপত্যকার ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলোর আশপাশে বেসামরিক লোকদের ওপর চালানো ‘মারাত্মক হামলা’কে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, এক বিবৃতিতে তুর্ক বলেন, ‘গাজার ক্ষুধার্ত ও আতঙ্কগ্রস্ত মানুষ যখন অল্প পরিমাণে আসা খাদ্য সহায়তা নিতে যাচ্ছে, তখন তাদের ওপর চালানো প্রাণঘাতী হামলা মর্মান্তিক ও অমানবিক।’
তিনি জানান, ‘টানা তিনদিন ধরে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন পরিচালিত একটি বিতরণ কেন্দ্রের আশপাশে মানুষ নিহত হচ্ছেন। আজ সকালে আমরা জানতে পেরেছি, সেখানে আরও বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।’
এএফপি জানায়,মঙ্গলবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আগের হিসাব থেকে আরও বেড়েছে।
এর আগে রবিবার একই স্থানে একই ধরনের আরেকটি হামলায় ৩১ জন নিহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহতরা সবাই সেখানে ত্রাণ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন।
তুর্ক এসব হামলার প্রতি দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানান এবং বলেন, ‘এ ধরনের হামলার জন্য যারা দায়ী, তাদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বেসামরিকদের লক্ষ্য করে চালানো হামলা আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ।’
‘ফিলিস্তিনিদের সামনে এখন সবচেয়ে ভয়াবহ দুটি পথ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই—ক্ষুধায় মারা যাওয়া কিংবা সামান্য খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে বোমায় নিহত হওয়া।’
তুর্ক আরও বলেন, ‘ইসরাইলের সামরিকীকৃত মানবিক সহায়তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যে সামান্য খাদ্য দেওয়া হচ্ছে, তা জীবন ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা বিতরণের মানদণ্ড লঙ্ঘন করছে, যা নিয়ে জাতিসংঘ বহুবার সতর্ক করেছে।’
যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) সম্প্রতি গঠিত একটি সংগঠন, যা গাজায় নতুন ধরনের সাহায্য বিতরণ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ইসরায়েলের সহযোগিতায় কাজ করছে।
তবে জাতিসংঘ এ সংগঠনের সঙ্গে কাজ করে না, কারণ জিএইচএফ নিরপেক্ষতা, পক্ষপাতহীনতা ও স্বাতন্ত্র্যের মতো মূল মানবিক নীতিমালা অনুসরণ করে না বলে জাতিসংঘ মনে করে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, ডয়েচে ভেলে
বিডি প্রতিদিন/নাজিম