সাবেক মার্কিন ‘সেকেন্ড জেন্টলম্যান’ ডগ এমহফকে হলোকাস্ট মেমোরিয়াল কাউন্সিল বোর্ড থেকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) অনলাইনে দেওয়া এক পোস্টে তা নিশ্চিত করেন ডেমোক্র্যাট দলীয় নেতা ডগ এমহফ।
পোস্টে ডগ এমহফ বলেন, সিদ্ধান্তটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ওয়াশিংটন থেকে ফরাসি গণমাধ্যম এএফপি জানিয়েছে, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের স্বামী ডগ এমহফ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সদস্য হিসেবে ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছিলেন। সেই সময়ই তাকে বোর্ডে নিয়োগ দেওয়া হয়।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে ডগ এমহফ বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই: হলোকাস্ট স্মরণ ও শিক্ষাকে কখনোই রাজনীতির হাতিয়ার বানানো উচিত নয়।’
ইহুদি ধর্মাবলম্বী ডগ এমহফ বলেন, ‘মানব ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ গণহত্যাকে রাজনৈতিক বিভেদের অস্ত্র বানানো বিপজ্জনক এবং এই জাদুঘর যাদের স্মৃতি রক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠিত, সেই ৬০ লাখ ইহুদি শহীদের প্রতি এটি চরম অসম্মান।’
ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের গণ্ডি ছাড়িয়ে তার ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী ভাবাদর্শ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাপিয়ে দিচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে ওয়াশিংটনের মর্যাদাপূর্ণ কেনেডি সেন্টার এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
এছাড়া, তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতেও আঘাত হানছেন। এমহফের কর্মস্থল ‘উইলকি ফার অ্যান্ড গ্যালাঘার’ আইন প্রতিষ্ঠানটির দিকেও নজর দিয়েছেন ট্রাম্প।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, হলোকাস্ট বোর্ড থেকে যাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আছেন বাইডেনের সাবেক চিফ অব স্টাফ রন ক্লেইন, অভ্যন্তরীণ নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা সুসান রাইস এবং সাবেক ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের একজন সহকারী।
টাইমস আরও জানায়, মঙ্গলবার সকালে বোর্ডের সদস্যদের কাছে হোয়াইট হাউস প্রেসিডেন্সিয়াল পারসোনেল অফিস থেকে এক ইমেইল পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে. ট্রাম্পের পক্ষ থেকে আপনাকে জানানো যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে আপনার পদ আগামী মুহূর্ত থেকে বাতিল বলে গণ্য।’
১৯৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস এই কাউন্সিল গঠন করে, যার প্রধান দায়িত্ব হলোকাস্ট স্মরণে জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়া। এর আওতায় ১৯৯৩ সালে হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠিত হয়।
এমহফ বলেন, ‘হলোকাস্ট স্মরণ ও শিক্ষা এবং ঘৃণা ও ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমার অঙ্গীকার অটুট আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কথা বলব, মানুষকে সচেতন করব, ঘৃণার বিরুদ্ধে লড়ব-কারণ নীরব থাকা কখনোই কোনো বিকল্প নয়।’
সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত