দক্ষিণ লেবাননের কুসাইবেহ–ব্রাইকে মহাসড়কে রবিবার (২১ এপ্রিল) একটি বিস্ফোরণে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন সেনা কর্মকর্তা, দুজন সেনাসদস্য এবং একটি গাড়িতে থাকা এক মা ও তার সন্তান রয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।
লেবাননের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বিস্ফোরিত গাড়িটি সাম্প্রতিক যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত গোলাবারুদ বহন করছিল। এখনো এই ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
এদিকে, বিস্ফোরণের সময় দক্ষিণ লেবাননের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী একাধিক বিমান হামলা চালায়। তারা দাবি করেছে, এসব হামলা ‘হিজবুল্লাহর অবকাঠামো ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ স্থাপনা’ লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে।
জাল শিহাব, জাবাল আল-রাফি’, মলিটা পাহাড়, সজদ, আল-লুয়াইজেহ, জাবাল সাফি, এবং জিজিন অঞ্চলের জাবাল আল-রিহানের বিভিন্ন এলাকায় এই হামলা চালানো হয়।
ইসরায়েলি বাহিনী হুলা এলাকায় একটি প্রিফ্যাবরিকেটেড ঘরে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যাতে একজন নিহত হন। এছাড়া সাইদন জেলার কাউথারিয়েহ আল-সিয়াদ আল-শারকিয়ায় এক গাড়িতে ড্রোন হামলায় হুসেইন আলি নাসর নিহত হন এবং আরও দুইজন আহত হন।
ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র অভিচাই আদরাই দাবি করেছেন, নিহত হুসেইন নাসর হিজবুল্লাহর ইউনিট ৪৪০০-এর উপ-প্রধান ছিলেন এবং অস্ত্র ও অর্থ পাচারের মাধ্যমে হিজবুল্লাহর সামরিক সক্ষমতা গড়ে তুলছিলেন।
তিনি আরও দাবি করেন, হুসেইনের সঙ্গে লেবাননের বিমানবন্দরের কিছু কর্মীর সম্পর্ক ছিল যারা গোপনে হিজবুল্লাহর হয়ে কাজ করতেন এবং অস্ত্র পাচারে সহায়তা করতেন।
ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, তারা এর আগেও ইউনিট ৪৪০০-এর প্রধান মোহাম্মদ জাফার কাসির এবং উপ-প্রধান আলী হাসান গারিবকে হত্যা করেছে।
এ পরিস্থিতিতে লেবাননের সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল রোডলফ হেইকেল রাষ্ট্রপতি জোসেফ আওন এবং প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালামকে দক্ষিণে চলমান হামলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফ করেন।
ইস্টার উপলক্ষে মারোনাইট প্যাট্রিয়ার্ক বেচারা বুতরোস আল-রাইয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতি আওন বলেন, 'লেবানন যুদ্ধ চায় না, এমন কথাও শুনতে চায় না। দেশটির সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার একমাত্র দায়িত্ব লেবানন সশস্ত্র বাহিনীর।'
তিনি বলেন, 'দেশে অস্ত্র বহনের একচ্ছত্র অধিকার কেবল রাষ্ট্রের হাতে থাকবে, তবে এর জন্য সঠিক পরিস্থিতির অপেক্ষা করতে হবে।'
একইদিনে, লেবাননের সেনা গোয়েন্দা বিভাগ দক্ষিণের সাইদন-জাহরানি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলের দিকে রকেট ছোড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল এমন একটি ফ্ল্যাট থেকে বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ও লঞ্চার উদ্ধার করে। এ সময় অভিযুক্ত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী সালাম সেনাবাহিনীর এ ধরনের পেশাদারিত্বপূর্ণ অভিযানের প্রশংসা করে বলেন, 'সরকার পুরো দেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং যুদ্ধ ও শান্তির সিদ্ধান্ত একমাত্র সরকারের অধিকার।'
সূত্র: আরব নিউজ
বিডি প্রতিদিন/মুসা