পরিবর্তনের এ সময়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে বিচার বিভাগ জনগণের প্রত্যাশার প্রতি সাড়া দিয়ে আইনের মর্যাদা রক্ষায় সুদৃঢ় ভূমিকা রেখেছে। এটাই প্রমাণ করে ন্যায়বিচারই জাতীয় অগ্রগতির সবচেয়ে শক্তিশালী নিয়ামক। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে। শনিবার রাতে সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সংঘটিত অবিস্মরণীয় গণ অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিচার বিভাগের সংস্কারের একটি জোরালো দাবি জনমানসে উত্থাপিত হয়। কারণ জুলাই অভ্যুত্থান ছিল মূলত ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতার এক যৌথ আকাক্সক্ষার প্রতিফলন, যা ন্যায়ভিত্তিক ও গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনের অপরিহার্য উপাদানও বটে। এই পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন, যা জাতির বিচার বিভাগের ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি হিসেবে তিনি এমন এক কঠিন সময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, যখন বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের প্রত্যাশা ছিল পর্বতসম এবং বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠন ছিল এক অপরিহার্য সময়ের দাবি। এমন এক প্রেক্ষাপটে জনগণের প্রত্যাশা এবং জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে সামনে রেখে প্রধান বিচারপতি ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন, যার মাধ্যমে বিচারব্যবস্থাকে আধুনিক, দক্ষ এবং সুশৃঙ্খল করার এক যুগোপযোগী কর্মসূচি শুরু হয়। প্রধান বিচারপতির ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটি এমন একটি কৌশলগত পরিকল্পনা, যার মূল লক্ষ্য বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং স্বাধীনতা, সততা ও দক্ষতার নীতির সঙ্গে দেশের বিচারব্যবস্থাকে পরিচালিত করা। এক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টিভঙ্গি এই যে, বিচার বিভাগ কেবল ন্যায়বিচার করলেই সন্তুষ্ট থাকবে না, বরং নিজের কাজের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচারের আদর্শ সমাজে এমনভাবে প্রতিফলিত করবে, যেন বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা দৃশ্যমান হয়। মূলত জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে প্রধান বিচারপতির এই সংস্কার উদ্যোগ বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থাকে জনগণকেন্দ্রিক এবং সময়োপযোগী করে তোলার এক অনন্য প্রচেষ্টা। সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রধান বিচারপতি তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিচার বিভাগ, আইনজীবী, উন্নয়ন সহযোগী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগের সংস্কারে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। বিশেষ করে প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতার বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেন। প্রধান বিচারপতির গৃহীত বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য ছিল বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনা।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রধান বিচারপতির এই সংস্কার উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণ, সহযোগিতা ও অংশীদারি নিশ্চিতকল্পে আইন মন্ত্রণালয়, বার কাউন্সিল, একাডেমিয়া এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের নিয়ে ইতোমধ্যে একটি জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ভিত্তিক কাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে, যা জাতির এই ক্রান্তিকালে বিচার বিভাগের সার্বিক মানোন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।