বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করাকে সমর্থন করে না বিএনপি। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে ২৮টি দল অংশগ্রহণ করেছে। নিষিদ্ধ করতে চাইলে এ ২৮টি দলকেই ফ্যাসিস্টের দোসর হিসেবে নিষিদ্ধ চাইতে হবে। তাহলে নির্বাচন কাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে?’
গতকাল রাজধানীর গুলশানে নিজস্ব বাসভবনে ‘জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি’ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা আমরা সমর্থন করি না। বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিষয়টি নির্ধারিত হোক। এটা আদালত নির্ধারণ করবেন। এর জন্য আইন সংশোধন করা হয়েছে। এ আইনটা আগে ছিল না। এখন গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য যে কোনো দলের বিরুদ্ধে আদালত ব্যবস্থা নিতে পারবেন। আদালত সিদ্ধান্ত নিলে নির্বাচন কমিশন মানতে বাধ্য। এ প্রক্রিয়ার বাইরে কোনো প্রক্রিয়া বিএনপি সমর্থন করে না।’ দলের এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘নিজেদের অতিরিক্ত সুবিধার জন্য কেউ কেউ আরও অনেক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ চাইতে পারে। তবে এখানে আওয়ামী লীগের বিষয়টি আলাদা। তারা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য সরাসরি দায়ী। দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য দায়ী। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরাই প্রথম আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি করেছিলাম।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দ্রুত গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন না হলে দেশে একটি সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হবে এবং পতিত ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে।’
জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতির দাবি প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সংসদে কয়েকটি আসন পাওয়ার লোভে জাতীয় স্বার্থের বাইরে গিয়ে কারও পিআর পদ্ধতি চাওয়া ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনবে। আমরা উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ সব জায়গাতেই পিআরের বিপক্ষে।’ ‘সার্বিক বিবেচনায় নির্বাচন পেছানোর আশঙ্কা দেখছেন কি না?’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বিলম্বিত অথবা বাধাগ্রস্ত করার জন্য যে কোনো রাজনৈতিক কৌশল এ দেশের জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে। এটা আমরা আগেও বলেছি। কারণ ভোটাধিকার প্রয়োগের দাবি আদায়, গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের মানুষ ১৬-১৭ বছর ধরে সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে, রক্ত দিয়েছে এবং শহীদ হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের দাবি পরবর্তীতে গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। এ অধিকার তখনই প্রতিষ্ঠা হবে, যখন আমরা অবাধ-সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ পাব, জনগণের সরকার পাব। সুতরাং যারাই এ পথে বাধা সৃষ্টি করতে চাইবে, তাদেরই জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে। এসব রাজনৈতিক কর্মসূচির জবাব দেওয়ার জন্য জনগণই বিচারক।’