অলিখিত ফাইনাল জিতে কলম্বোয় ইতিহাস লিখল বাংলাদেশ। রানাসিংহে প্রেমাদাসার ম্যাচটি ছিল টাইগারদের ইতিহাস লেখার। স্বপ্নিল পারফরম্যান্সে ম্যাচটি জিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবার টি-২০ সিরিজ ঘরে তুলল লিটন বাহিনী। প্রেমাদাসার ম্যাচটি ছিল টাইগারদের স্বপ্নপূরণের। ২১ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতে স্বপ্ন পূরণ করেন লিটন, তানজিদ, মেহেদিরা। ওয়ানডে সিরিজ জয়েরও হাতছানি ছিল। ওয়ানডেতে স্বপ্নভঙ্গ হলেও টি-২০ সিরিজে হয়নি। ঐতিহাসিক ম্যাচ জয়ের নায়ক অফ স্পিনার শেখ মেহেদি হাসান। সিরিজ-সেরা অধিনায়ক লিটন। টি-২০ সিরিজ জিতে শ্রীলঙ্কা সফর শেষ করেছে বাংলাদেশ। দেশে ফিরে লিটনরা ব্যস্ত হয়ে পড়বেন পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলতে। ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ টি-২০ সিরিজের শুরুর দুই ম্যাচ খেলেন। পারফরম্যান্স ভালো না হওয়ায় গতকালের অলিখিত ফাইনালে খেলেননি। তাঁর জায়গায় খেলেন অফ স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদি। খেলতে নেমেই বাজিমাত করেন ম্যাচসেরা হয়ে। পয়মন্ত প্রেমাদাসার স্পিন উইকেটের সুবিধা পুরোপুরি আদায় করেন স্পিনার মেহেদি। ৪ ওভারের স্পেলে স্বাগতিকদের ৪ উইকেট নেন। স্পেলে একটি মেডেনও ছিল। ৫৮ টি-২০ ক্যারিয়ারে এটা তাঁর সেরা বোলিং স্পেল। ম্যাচের স্পেল ৪-১-১১-৪। আগের সেরা বোলিং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪ ওভারে ১৩ রানের খরচে ৪ উইকেট। মেহেদির ক্যারিয়ার-সেরা বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কা ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩২ রান করে। সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। এ ছাড়া ইনিংসের শেষ ওভারে দাসুন শানাকা ২টি করে ৪ ও ৬ মেরে ২২ রান নেন। ওভার ৬.৬৫ রান টার্গেটে ইনিংসের প্রথম বলেই নুয়ান থুসারার বলে লেগ বিফোর হন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তানজিদ ও অধিনায়ক লিটন ৫০ বলে ৭৪ রান যোগ করে বিচ্ছিন্ন হন। লিটন ব্যক্তগত ৩২ রানে কামিন্দু মেন্ডিসের বলে আউট হন। বিনুরা ফার্নান্দোর বলে লেগ বিফোর হয়েও রিভিউতে বেঁচে যান টাইগার অধিনায়ক। দলীয় ৭৪ রানে লিটনের বিদায়ের পর তানজিদ ও তাওহিদ হৃদয় অবিচ্ছিন্ন থেকে ম্যাচ শেষ করেন।
তানজিদ ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ৭৩ রানে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম হাফ সেঞ্চুরির ইনিংসটি ছিল মাত্র ৪৭ বলে ১ চার ও ৬ ছক্কায়। ১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে উইনিং শট হাঁকানো হৃদয় অপরাজিত থাকেন ২৭ রানে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই প্রথম টি-২০ সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে দুই ম্যাচ সিরিজ ড্র হয়েছিল ১-১ ব্যবধানে। সেবারও প্রেমাদাসায় একটি ম্যাচ জিতেছিলেন টাইগাররা। এ ভেন্যুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চার ম্যাচ জিতেছেন এবং হেরেছেন একটি। ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে একটি ম্যাচ টাইগাররা জিতেছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ছক্কায়। একই টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কার ২১৪ রান তাড়া করে জিতেছিলেন; যা বাংলাদেশের টি-২০ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। দেশটির মাটিতে তিনটি সিরিজ খেলেছেন টাইগাররা। ২০১৩ সালে এক ম্যাচের সিরিজ জিতেছিল শ্রীলঙ্কা।
২০১৭ সালে দুই ম্যাচের সিরিজটি ড্র হয়েছিল ১-১ ব্যবধানে। এবার তিন ম্যাচের সিরিজ বাংলাদেশ জিতল ২-১ ব্যবধানে। পাল্লেকেলেতে প্রথম ম্যাচ হেরেছিল ৭ উইকেটে। ডাম্বুলায় দ্বিতীয় ম্যাচ ৮৩ রানের রেকর্ড ব্যবধানে জিতে সমতা আনে সিরিজে।