যার তুলির স্পর্শে বাংলাদেশ জীবন্ত হয়ে ওঠে। অসম্ভব সৃষ্টিশীল চিত্রকলা বীর তিনি। এ দেশের মানুষ যাকে এক নামে চেনে তিনি মুস্তাফা মনোয়ার। আজ এই জীবন্ত কিংবদন্তির জন্মদিন। তাঁর প্রতি রইল অগাধ শ্রদ্ধা। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের হাত ধরে ঢাকা আর্ট কলেজে কিছুদিন শিক্ষকতাও করেন। তারপর একটি নতুন বিনোদন মাধ্যম এলো। ১৯৬৪ সাল। বিনোদন মাধ্যমটির নাম টেলিভিশন। এটি বিশ্বব্যাপী দর্শকদের কাছে ভীষণ প্রিয় হলো। এই টেলিভিশনের শুরুতে যারা ছিলেন তাদের ভিতর যিনি উজ্জ্বল হয়ে উঠলেন তিনি মুস্তাফা মনোয়ার। তাঁর হাত ধরে বিভিন্ন ধরনের টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মিত হয়েছিল। নাটক ও সেটের ভিন্নতা এসেছিল। অনেক ফরম্যাটেই টেলিভিশন অনুষ্ঠান করেছেন তিনি। বড়দের অনুষ্ঠান, ছোটদের অনুষ্ঠান, যেখানেই তিনি হাত দিয়েছেন সেখানেই সোনা ফলেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের ইতিহাসের সঙ্গে মুস্তাফা মনোয়ারের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে এবং থাকবে। নতুন কুঁড়ির মতো ছোটদের অনুষ্ঠান কিংবা রক্ত করবীর মতো নাটক তাঁর হাত দিয়েই তৈরি হয়েছে। তিনি আর্ট কলেজ ছেড়ে দিলেন, যখন দেখলেন একটি নতুন মাধ্যম বাঙালিদের হৃদয়ে আনন্দের ঢেউ তুলেছে। তখন তিনি টেলিভিশনের সঙ্গে আর্ট কলেজের ছেলেমেয়েদেরও যুক্ত করলেন। তাদের অনেক নামই আমার মনে পড়ছে-কাজী কাইয়ুম, আবদুল মান্নান, মহিউদ্দিন ফারুক কিংবা ফিরোজ মাহমুদসহ যারা আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে টেলিভিশনে এসেছিলেন সেটা মুস্তাফা মনোয়ারের কল্যাণেই। তারা টিম হিসেবে কাজ করে টেলিভিশন পর্দাকে বদলে ফেলেছিলেন। স্বনির্বাচিত নামে টেলিভিশনে মুস্তাফা মনোয়ার একটি অনুষ্ঠান শুরু করেছিলেন। এটি সেমিনারধর্মী অনুষ্ঠান। এ ধরনের অনুুষ্ঠান যে টেলিভিশনে হতে পারে সেটি তিনি বুঝিয়েছিলেন। তিনি গান ভালোবাসতেন। জলসা নামে একটি গানের অনুষ্ঠান করেছিলেন। তাঁর নির্মিত মনের কথা নামে ছোটদের একটি অনুষ্ঠান ভীষণ জনপ্রিয় ছিল। টেলিভিশন অনুষ্ঠানের বাইরে তাঁর সৃজনশীলতার যে জায়গাটা অলৌকিকভাবে উজ্জ্বল হয়ে আছে-পাপেট। মানুষের হাসি আনন্দ এবং সমকালীন চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলেছেন এই পাপেটের ভিতর দিয়ে। তিনি নিজ হাতে এসব পাপেট তৈরি করেছেন। মুস্তাফা মনোয়ার সম্পর্কে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছিলেন-তিনি যদি ফিল্ম বানাতেন তাহলে বাঙালি চলচ্চিত্রকারদের মধ্যে প্রধানতম হতেন এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। কারণ তিনি চলচ্চিত্র সম্পর্কে এত গভীরভাবে জানেন যা অন্যরা জানে না। আমাদের চ্যানেল আইয়ের একটি স্টুডিওর নামকরণ করা হয়েছে ‘মুস্তাফা মনোয়ার স্টুডিও’। স্টুডিওটি উদ্বোধন উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি। চ্যানেল আইয়ের বার্তাপ্রধান ও পরিচালক শাইখ সিরাজসহ আমরা সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। মুস্তাফা মনোয়ারের বক্তব্য আমাদের মুগ্ধ করেছিল। সবাই নতুন করে জেনেছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যে লাল বৃত্ত রয়েছে সেটি তাঁরই চিন্তার ফসল। নব্বই পেরিয়ে যাচ্ছেন তিনি। জীবনভর ক্লান্তিহীন কাজ করে গেছেন। কলকাতা আর্ট কলেজ থেকে তিনি অবিভক্ত ভারতবর্ষে স্বর্ণপদক পেয়ে পাস করেছিলেন। জলরঙের জাদুকর তিনি। যে কোনো সাদা কাগজে তুলির আঁচড়ে বারবার বিস্মিত করেন। চিত্রকলাবিদ থেকে তিনি হয়ে গেলেন টেলিভিশনের মানুষ, সবার প্রিয় মন্টু মামা। আপনি ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা।
শিরোনাম
- ১৫ মাসে অন্তর্বর্তী সরকার যা করেছে, অতীতে কেউ করতে পারেনি : প্রেস সচিব
- শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ‘খুবই উদ্বেগজনক’ ঘটনা: শশী থারুর
- পারমাণবিক শক্তি অর্জনের পথে সৌদি আরব?
- সরকারের সমালোচনা: ভেনেজুয়েলায় নারী চিকিৎসকের ৩০ বছরের কারাদণ্ড
- রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনে হতাহত ১৮
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও যেসব মামলা আছে ট্রাইব্যুনালে
- শেখ হাসিনার রায় নিয়ে যা বলল জাতিসংঘ
- গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনে জাতিসংঘের অনুমোদন, হামাসের প্রত্যাখ্যান
- আমার ছেলের খুনীর ফাঁসি যেন দেখে যেতে পারি: আবু সাঈদের বাবা
- দিল্লি বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫, গ্রেফতার আরও এক কাশ্মীরি
- মালয়েশিয়ায় শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন সাইবারজায়া ইউনিভার্সিটি
- আফ্রিকার ছয় দেশে আছে রুশ সেনার উপস্থিতি: রাষ্ট্রীয় টিভি
- ‘খালেদা জিয়াকে দেশের সেরা জয় উপহার দিতে চাই’
- উইঘুর যোদ্ধাদের চীনের কাছে হস্তান্তর করবে সিরিয়া
- ‘একটি দল ক্ষমতায় যেতে প্রলাপ বকছে’
- সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাশে থাকবে চীন
- বগুড়ায় কোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান
- শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে যা বলল ভারত
- মোংলায় জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ বিষয়ক সমন্বয় সভা
- আকাশ প্রতিরক্ষা ও যুদ্ধবিমান চুক্তি চূড়ান্ত করতে ফ্রান্সে জেলেনস্কি