২০২৬ সালের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে চায় বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর। সোমবার বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের চতুর্থ যৌথ পরামর্শক সভায় (এফওসি) এফটিএ চুক্তি নিয়ে উভয়পক্ষ এ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সিঙ্গাপুরে হওয়া সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন। অন্যদিকে সিঙ্গাপুরের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্মানেন্ট সেক্রেটারি লুক গো। সভায় এফটিএ চূড়ান্ত করার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পায়।
উভয়পক্ষ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, সংযোগ, ডিজিটাল অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, কৃষি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পর্যটন এবং মানবসম্পদ উন্নয়নের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। আলোচনায় এসেছে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যু।
আলোচনায় শুল্ক সংক্রান্ত সহযোগিতা চুক্তি, দ্বৈত কর পরিহারের জন্য সংশোধিত প্রটোকল, অপরাধ প্রতিরোধে পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি এবং পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই করার বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে।
আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উন্নয়নসহ আঞ্চলিক বিষয়গুলো উঠে আসে।
পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিন তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, সিরামিক, পাটজাত পণ্য, পাদুকার মতো পণ্যের নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে বাংলাদেশের খ্যাতি তুলে ধরেন।
তিনি সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের এসব খাতে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। এ ছাড়া আলোচনায় সিঙ্গাপুরকে বাংলাদেশের শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পররাষ্ট্রসচিব আরও বেশি সিঙ্গাপুরী বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
তিনি বিশেষ করে জ্বালানি খাত, কৃষি প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম, চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদ এবং পর্যটন অবকাঠামোতে সম্ভাব্য সহযোগিতা চান। বাংলাদেশে টেকসই জ্বালানি উৎপাদন জোরদার করার জন্য বর্জ্য থেকে শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র তৈরিতে সিঙ্গাপুরের সহায়তা চান জসীম উদ্দিন।
উভয়পক্ষ সিঙ্গাপুরে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকদের উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা স্বীকার করেন এবং প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগসহ মানবসম্পদ উন্নয়নে ভবিষ্যতের সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।
আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার জন্য সিঙ্গাপুরের প্রতি বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং আসিয়ান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং আঞ্চলিক ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব (আরসিইপি)-তে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করে।
বিডি-প্রতিদিন/শআ