কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের এক জেলের ‘কালো পোয়া’ নামে বিরল একটি সামুদ্রিক মাছ জালে ধরা পড়েছে। শনিবার সকালে মাছটি মৎস্য বন্দর আলীপুরের মেসার্স জাবের ফিশে অন্যান্য মাছের সঙ্গে মাছটি নিয়ে আসেন জেলেরা। পরে উন্মুক্ত ডাকের মাধ্যমে ৪ কেজি ৯০০ গ্রাম ওজনের মাছটি ১৬ হাজার টাকা কেজি দরে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। সচরাচর এ প্রজাতির মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ে না বলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
এদিকে মাছটি আড়তে তোলা হলে ডাকের মাধ্যমে ‘ফ্রেশ ফিশ কুয়াকাটা’র স্বত্বাধিকারী পি. এম. মুসা কিনে নেন। এর আগে গত বুধবার সাড়ে ৪ কেজি ওজনের আরও একটি কালো পোয়া তিনি ৭২ হাজার টাকায় কেনেন। জানা গেছে, মাছ দু’টি রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
স্থানীয় জেলেদের কাছে মাছটি ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’ ও ‘দাঁতিনা’ নামেও পরিচিত। মৎস্য গবেষকদের মতে, এ মাছের আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ফিশ বাংলাদেশের গবেষণা সহকারী মো. বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, কালো পোয়া (Protonibea diacanthus) হলো Sciaenidae পরিবারের একটি দুষ্প্রাপ্য সামুদ্রিক মাছ। এর দৈর্ঘ্য সাধারণত ৫০ থেকে ১৮০ সেন্টিমিটার হলেও কখনো কখনো ১.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। ওজন ১০ থেকে ২৫ কেজি হলেও অনেক সময় ৫০ কেজিরও বেশি পাওয়া যায়। মাছটি বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার, মহেশখালী, সেন্টমার্টিন, পটুয়াখালী ও বরিশাল উপকূলে মাঝেমধ্যে দেখা যায়। এরা সাধারণত কাদামাটি বা বালুময় তলদেশে বসবাস করে এবং ছোট মাছ, চিংড়ি ও অন্যান্য ক্রাস্টেশিয়ান খেয়ে বেঁচে থাকে।
তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে মাছটির বিশেষ চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে এর এয়ার ব্লাডার (Swim bladder) চীনা ঐতিহ্যবাহী ওষুধ ও প্রসাধনী তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ফলে এটি বাংলাদেশের অন্যতম দামী ও রপ্তানিযোগ্য সামুদ্রিক মাছ হিসেবে বিবেচিত।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, এ মাছকে ব্ল্যাক স্পটেড ক্রোকারও বলা হয়। সম্প্রতি জেলেদের জালে দুটি কালো পোয়া ধরা পড়েছে। এটি মৎস্য খাতের জন্য অত্যন্ত খুশির খবর।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল