রংপুর গঙ্গাচড়া উপজেলায় তিস্তা সেতু রক্ষা বাঁধের ৬০ মিটার ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উজানের পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভাঙন অব্যাহত থাকায় তিস্তা সেতু, রংপুর-লালমনিরহাট সড়কসহ কয়েকটি চর ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন নদীর তীরবর্তী মানুষরা।
জানা গেছে, রংপুরের সঙ্গে লালমনিরহাটের যোগাযোগ সহজ করতে ২০১৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ১২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে গঙ্গাচড়ার মহিপুরে তিস্তা নদীর উপর দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ করে। চলতি বছরের আগস্টে উজানের ঢলের তীব্র স্রোত সরাসরি এসে আঘাত হানে বাঁধে। এতে করে বাঁধের নিচের অংশের মাটি ভেসে গিয়ে ব্লকগুলো ধসে পড়ে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি স্থানীয় এলজিইডি কর্মকর্তাদের জানালে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুসা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেই সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় সেতু রক্ষা বাঁধের ধসরোধে কাজ করার কথা জানান। কিন্তু পরে সেই কাজ বাস্তবায়ন করেনি এলজিইডি। চলতি মাসের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে উজানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটিতে ভাঙন শুরু হয়। বুধবার বিকেল পর্যন্ত বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উজানের ঢলের কারণে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
লহ্মীটারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী জানান, বাঁধ ভাঙনের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্তৃপক্ষ এলজিইডিকে জানিয়েছে। তারা জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার কথা বলেছে। এর আগে বাঁধ যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল আমি এলজিইডিকে জানালে তারা মেরামতের আশ্বাস দেন। কিন্তু পরবর্তীতে কোনো কাজ করেনি। ফলে আজ বাঁধের বড় অংশ ভেঙে গেছে। যেহেতু ভারত থেকে পানি হু হু করে ঢুকছে, তাই পুরো বাঁধটি দ্রুত ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে করে তিস্তা সেতু, রংপুর-লালমনিরহাট সড়ক, শংকরদহ, ইচলীসহ কয়েকটি চরের গ্রাম ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
এ ব্যাপারে এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী ওবায়দুর রহমান বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। বাঁধ ভেঙেছে কিংবা বাঁধটি আমাদেরও কিনা জানি না। মিটিং শেষ করে আমি খোঁজ নেব।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, তিস্তাসেতু রক্ষা বাঁধে ভাঙনের বিষয়ে আমি ডিসি স্যার ও এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আমাকে জানিয়েছে। এ বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই