ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের ইয়াকুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভবন সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ঘরে এবং পাশের এতিমখানার ভবনে ক্লাস নিতে হচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। তারা অভিযোগ করেছেন, বিদ্যালয়ে পাঠদানের উপযুক্ত পরিবেশ নেই। দ্রুত বহুতল স্থায়ী ভবন নির্মাণ, মানসম্মত টয়লেট ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ে ২০১০ সালে একটি দোতলা ভবন নির্মিত হলেও মাত্র ১০ বছরের মধ্যে তা ভেঙে পড়তে শুরু করে। ২০২০ সালে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে পরিত্যক্ত করা হয় এবং চলতি বছরের জুনে নিলামের মাধ্যমে ভেঙে ফেলা হয়। বর্তমানে দুই কক্ষবিশিষ্ট জরাজীর্ণ ভবন ও পাশের এতিমখানার মাদ্রাসা ভবনে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৫১ জন শিক্ষার্থীর ক্লাস চলছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে ১৭ লাখ ৮০ হাজার টাকায় তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি টিনশেড ভবন নির্মাণ করা হলেও এখনো সেখানে দরজা, জানালা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, ফ্যান ও লাইট লাগানো হয়নি। ফলে ভবনটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এছাড়া বিদ্যালয়ে টয়লেট ও পানীয় পানির কোনো যথাযথ ব্যবস্থা নেই।
শিক্ষার্থীর অভিভাবক আব্দুল করিম বলেন, বিদ্যালয়ে টয়লেট থাকলেও তা ব্যবহার অযোগ্য। পানি নেই, বাইরে থেকে আনতে হয়। বাচ্চারা জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে পড়াশোনা করছে। এভাবে চলতে থাকলে ভর্তি কমে যাবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকলিমা আক্তার জানান, নতুন ভবনে দরজা-জানালা ও বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া হলে শ্রেণি কার্যক্রম চালানো যাবে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য শাহীনা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ে নানা সমস্যা রয়েছে, বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে শিক্ষার্থীরা।
সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলী আজগর বলেন, এলজিইডির মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে যে শ্রেণিকক্ষ নির্মিত হয়েছে, তা দ্রুত ব্যবহারোপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান জানান, নতুন ভবনের জন্য আবেদন করা হয়েছে এবং টিনশেড ভবনের অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল