পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে বুড়াগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীর তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সাবমেরিন ক্যাবল কেটে নেওয়ার ঘটনায় ৪৭ ঘণ্টা পর পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) রাত ১১টার দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ সচল হলে চরম ভোগান্তির পর স্বস্তি ফিরে পান রাঙ্গাবালী উপজেলা সদরসহ চারটি ইউনিয়নের অন্তত ২৫ হাজার গ্রাহক।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্থানীয়দের সহযোগিতায় দুইজনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে এই চক্রের মূলহোতারা এখনো পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন—গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের গোবতের হাওলা গ্রামের বাদশা মৃধার ছেলে জসিম মৃধা (৩৫) ও রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চর রুস্তুম গ্রামের রাজা মৃধার ছেলে জুয়েল মৃধা (২৫)। তারা পরস্পর চাচাতো ভাই।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রাঙ্গাবালী সাব-জোনাল অফিসের এজিএম প্রকৌশলী কাওসার আহম্মেদ জানান, ভোলার উপকেন্দ্র থেকে বুড়াগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে রাঙ্গাবালী উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। শনিবার রাত ১১টার দিকে গহিনখালী সংলগ্ন নদীর অংশে ওই ক্যাবলের দুটি ফেইজ কেটে ফেলা হয়। তিনটি ফেইজের মধ্যে একটি সংরক্ষিত ফেইজসহ মোট দুটি কেটে ফেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকাল ৪টায় গলাচিপার পানপট্টি এলাকা থেকে জসিম মৃধার মালিকানাধীন ট্রলারে চক্রের সদস্যরা যাত্রা করে এবং রাত ৮টার দিকে গহিনখালী এলাকায় পৌঁছে ক্যাবল কাটার কাজ শুরু করে। ক্যাবল কাটার সময় বিকট শব্দ শুনে চক্রের ছয় সদস্য পালিয়ে যায়। তবে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়ে জসিম মৃধা ও জুয়েল মৃধা নামের দুজন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, ভোলা থেকে ছয় সদস্যের চক্রটি এসে তাদের ট্রলার ভাড়া করেন। সাবমেরিন ক্যাবল কেটে নিতে তারা প্রায় তিন লাখ টাকার সরঞ্জাম কিনেছিলেন। ছয়জন সদস্যের বাড়ি ভোলা জেলায় হলেও তাদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. এমারৎ হোসেন বলেন, আটক দুজনকে আসামি করে অজ্ঞাত আরও ছয় জন অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটকৃকতদের আদালতে হাজির করলে বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠায়। ঘটনায় জড়িত ভোলা জেলার বাসিন্দা চোর চক্রের মূল সদস্যদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। তবে তাদের নাম পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার মো. আবুল কাশেম জানান, দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কাটা ক্যাবল মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এনে সোমবার রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালু করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ