প্রযুক্তির অগ্রগতি ও প্রতিযোগিতার বাজারে টিকতে না পারায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী কামার শিল্প। বছরের অধিকাংশ সময় কর্মহীন থাকলেও কোরবানির ঈদ সামনে রেখে নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে ঝিনাইদহের কামার পল্লী।
জেলার ৬ উপজেলার ৬৭টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০০ কামার পরিবার এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঈদ উপলক্ষে পশু কোরবানির জন্য দাঁ, ছুরি, চাপাতিসহ নানা সরঞ্জাম তৈরিতে দিনরাত এক করে কাজ করছেন তারা। অতিরিক্ত কাজের চাপে অনেকে নতুন অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
কারিগররা জানান, কয়লার আগুনে লাল হয়ে ওঠা লোহায় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তৈরি করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। ধার বাড়াতে শান দেওয়া হচ্ছে ছুরি-চাপাতিতে। আবার কেউ রেত দিয়ে শানাচ্ছেন দাঁ বা চাপাতি।
তারা জানান, লোহা, কয়লা ও শ্রমের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বছরের অন্যান্য সময় ব্যবসা তেমন চলে না। তবে ঈদ মৌসুমে চাহিদা থাকায় ব্যবসা কিছুটা ভালো হয়। এই সময়ে তারা বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান।
এ শিল্পের প্রধান উপকরণ কাঠ-কয়লার দাম অনেক বেড়ে গেছে। আগে যেখানে ১০০-১৫০ টাকায় এক বস্তা কাঠ আর কয়লা মিলত, এখন তা ২০০-২৫০ টাকা। একইভাবে লোহার দামও বেড়েছে। গত বছর যেখানে কেজি প্রতি লোহা ছিল ৮০-৯০ টাকা, সেখানে এখন তা ১২০-১৫০ টাকা। ফলে উৎপাদন খরচ বাড়ায় পণ্যের দামও কিছুটা বাড়াতে হচ্ছে।
তবে দাম কিছুটা বেশি হলেও ক্রেতারা প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনছেন বলে এমনটাই জানিয়েছেন কামাররা। অনেকেই পৈত্রিক এই পেশা নানা কষ্ট সত্ত্বেও ধরে রেখেছেন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ