কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট মামুন আহমেদ রাফসান নামে এক হোটেল কর্মচারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচনাসহ ১৪৭ জনের নাম উল্লেখ করে দেড়শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলার বাদী মো. রানু মিয়া হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের মো. ছালেক মিয়ার ছেলে। তিনি নিহত রাফসানের ভাই। বুধবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ওসি মো. মহিনুল ইসলাম।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট বিকাল ৩টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জেলার আদর্শ সদর উপজেলার ক্যান্টনমেন্ট ওভারব্রিজের নিচে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিল চলছিল। এসময় তৎকালীন এমপি বাহার ও তার মেয়ে সূচনার হুকুমে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা পিস্তল, একনালা বন্দুক, শর্টগান, রাইফেল, হাতবোমা, ককটেলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালায়। তারা এলোপাতাড়ি গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে। হাতবোমা ও ককটেল বিস্ফোরণসহ গুলিতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। এসময় আন্দোলনে অংশ নেয়া একটি হোটেলের কর্মচারী মামুন আহমেদ রাফসান (১৮) গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় সড়কে লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। মামলায় আলোচিত অপর আসামিরা হচ্ছেন, আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল, সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু, বুড়িচং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আখলাক হায়দার, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টুসহ বেশ কয়েকজন সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কিছু নেতা-কর্মী।
মামলার বাদী মো. রানু মিয়া বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের দোসররা প্রকাশ্যে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার উপর হামলা করেছিল। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আমার ভাই নিহত হন। তিনি অবিলম্বে আসামিদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মহিনুল ইসলাম জানান, আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ মামুন হাসপাতালে মারা যাওয়ার পর তার স্বজনরা খবর পেয়ে মরদেহ হবিগঞ্জ নিয়ে দাফন করে। পরে পরিবার মামলা করতে আসেনি। সরকারি গেজেটে শহীদ তালিকায় ওই ব্যক্তির নাম আসায় পরিবারের পক্ষ তার ভাই বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ