ঢাকার কেরাণীগঞ্জে কবিরাজ মফিজুর রহমান হত্যা মামলায় এক নারী ও তার দেবরকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসরাত জাহান মুন্নী এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মাকসুদা আক্তার লাকী ও তার দেবর সালাউদ্দিন। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডিতরা জামিনে গিয়ে ২০২৩ সাল থেকে পলাতক রয়েছেন। পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি কেরাণীগঞ্জের বেউতা গণকবরের সামনের ডোবা থেকে হাত, পা ও মাথাবিহীন খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সেই বছরের ২ জানুয়ারি কেরাণীগঞ্জ থানায় মামলা করেন এসআই এস এম মেহেদী হাসান।
বাদীপক্ষের আইনজীবী রবিউল ইসলাম বলেন, মামলার ভিকটিম মফিজুর রহমান একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তার সার, কীটনাশকের দোকানও ছিল। পাশাপাশি তিনি কবিরাজি করতেন। আসামি লাকীর সামনে বিদেশে থাকেন। তাদের একটা ছেলে সন্তান রয়েছে। অধিক সন্তানের আশায় তিনি ভিকটিমের কাছে যান। তাদের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তিনি বলেন, বিষয়টি জানাজানি হলে আসামিরা তাকে খুনের পরিকল্পনা করেন। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভিকটিম মফিজুর রহমানকে লাকীর বাসায় দাওয়াত করা হয়। পরে মফিজুর রহমান তার বাসায় যান। গরুর মাংস, চায়ের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাকে অজ্ঞান করা হয়। পরে তার দেহকে ১০ টুকরো করে এখানে-সেখানে ফেলা হয়।
আইনজীবী রবিউল বলেন, মফিজুর রহমান নিখোঁজের ঘটনায় তার ভাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশের তদন্তে সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের (দণ্ডিতদের) নাম আসে। এরপর তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তারা হত্যার দায় স্বীকার করে। মফিজুরের দেহের টুকরোগুলো উদ্ধার করা হয়।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকার দক্ষিণ গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক নাজমুল হাসান দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। এরপর বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করা হলো।
বিডি প্রতিদিন/কেএ