যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বন্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের আদেশ আবারও আদালতের বাধায় পড়েছে। মার্কিন জেলা জজ অ্যালিসন বারোস বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ওই আদেশের ওপর ইতোমধ্যে জারি করা স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়িয়েছেন।
এই আদেশ অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন আপাতত হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করতে পারবে না। এর আগে গত সপ্তাহে বিচারক বারোস একটি সাময়িক স্থগিতাদেশ দেন।
মার্কিন স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগের (ডিএইচএস) সচিব ক্রিস্টি নোয়েম সম্প্রতি হার্ভার্ডকে একটি চিঠি দিয়ে জানান, সরকার নির্ধারিত নিয়ম না মানলে তাদের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি অনুমোদন বাতিল করা হবে। এর পরপরই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ‘প্রশাসনিক প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ না করা’র অভিযোগ তুলে ডিএইচএস-এর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে।
পরে অভিবাসন ও শুল্ক বিভাগের পরিচালক টড লায়নস হার্ভার্ডকে আরেকটি চিঠিতে জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সহিংসতা ছড়ানো, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ এবং ইহুদিবিদ্বেষ ছড়ানোর মতো অভিযোগ আনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।
হার্ভার্ডের অভিবাসন সেবার পরিচালক মওরিন মার্টিন আদালতে জানান, সরকারের এমন পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর ভয়, উদ্বেগ ও বিভ্রান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তিনি আরও বলেন, অনেক দেশি শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় বদল বা ভর্তি স্থগিত করার কথা ভাবছেন। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরাও অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।
এই বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনির মেয়ে ক্লিও কারনি, যিনি হার্ভার্ডে প্রথম বর্ষ শেষ করেছেন। তিনি একটি পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন বিষয়ক প্রোগ্রামে পড়ছেন। আরও রয়েছেন বেলজিয়ামের সিংহাসনের উত্তরসূরি প্রিন্সেস এলিজাবেথ, যিনি হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলে পাবলিক পলিসিতে মাস্টার্স করছেন।
এই ঘটনার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হার্ভার্ডকে কটাক্ষ করে লেখেন, হার্ভার্ডের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো—তারা নিজেদের পক্ষে সবচেয়ে সুবিধাজনক বিচারক খুঁজে পেয়েছে। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, শেষ পর্যন্ত সরকারই জিতবে।
বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের অভ্যন্তরীণ নীতিতে পরিবর্তন দাবি করছে। প্রশাসনের অভিযোগ, হার্ভার্ড হচ্ছে একপেশে উদারপন্থার ঘাঁটি এবং ইহুদি শিক্ষার্থীদের যথাযথ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। কিন্তু হার্ভার্ড প্রশাসন এই রাজনৈতিক চাপ প্রত্যাখ্যান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল