সুদানে দুই বছরের গৃহযুদ্ধের কারণে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে দেশটি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তার কারণে প্রতিনিয়ত দেশটির বেসামরিক নাগরিকদের চরম মূল্য দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এরইমধ্যে তৃতীয় বছরে চলমান দেশটির গৃহযুদ্ধ।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে ক্ষমতা দখলের জন্য ভয়াবহ লড়াই চলছে। এই সংঘাত বিশ্বে সবচেয়ে বড় মানবিক সংকটের জন্ম দিয়েছে, ঘরছাড়া করেছে কোটি কোটি মানুষকে। দেশটির দারফুর অঞ্চলে আধাসামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর সাম্প্রতিক হামলায় ৪০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি এটিকে বিশ্বস্ত সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য হিসেবে উল্লেখ করেছে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত সপ্তাহে দারফুরের এল-ফাশের শহরের আশপাশে থাকা শরণার্থী শিবিরগুলোর ওপর ভয়াবহ স্থল ও বিমান হামলা চালায় আরএসএফ। তাদের লক্ষ্য ছিল এল-ফাশের দখল নেওয়া। মূলত এই শহরটি এখনও সুদানের সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা দারফুর অঞ্চলের শেষ বড় শহর।
এদিকে, জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক জরুরি শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) সুদানে দুই বছরের গৃহযুদ্ধের ফলে শিশুদের বিরুদ্ধে হত্যা থেকে অপহরণ পর্যন্ত বড় ধরনের অপরাধের সংখ্যা ১ হাজার শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে সোমবার এ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে। জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক জরুরি শিশু তহবিল বলেছে, এই ধরনের ঘটনার মধ্যে পঙ্গুত্ব এবং স্কুল ও হাসপাতালে আক্রমণও অন্তর্ভুক্ত। যা আগে কয়েকটি অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু আধা সামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস এবং সুদানের সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাতের ফলে আরো কিছু অঞ্চলে এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়েছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, দুই বছরের সহিংসতা এবং বাস্তুচ্যুতি সুদানজুড়ে তছনছ করে দিয়েছে লাখ লাখ শিশুর জীবনকে।
এদিকে, সুদানে নিয়েজিত আন্তর্জাতিক রেড ক্রস প্রতিনিধি দলের প্রধান জানিয়েছেন, দেশটিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ব্যাপক লঙ্ঘন হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম