নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কাছারি ঘাটে চিকলি নদীর ওপর নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা। দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁঁকি নিয়ে এ সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয় তাদের। কৃষিপণ্য আনা নেওয়া করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় কৃষকদের। যানবাহন পারাপারে ১০ কিলোমিটার বেশি ঘুরতে হয়। বর্ষাকালে পানি বাড়লে নদী পারাপারে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের পশ্চিম অসুরখাই, পূর্ব অসুরখাই ও দক্ষিণ অসুরখাই এলাকায় অবস্থিত কাছারি ঘাট। সেখানে সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন নদী পারাপার হয় কামারপুকুর ইউনিয়ন ও কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নসহ ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ। বাধ্য হয়ে চলাচলের সুবিধার্থে ওই এলাকার লোকজন চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করেন।
সৈয়দপুর উপজেলা কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল মুয়িদ বিন কাদির বলেন, কামারপুকুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তোফায়েলের মোড় কাছারি ঘাটে ওই বাঁশের সাঁকো রয়েছে। এর পূর্বপাশে কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর ইউনিয়ন ও রংপুর তারাগঞ্জের আলমপুর ইউনিয়নে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। ওই ইউনিয়নের মানুষের সৈয়দপুর শহরে আসার রাস্তা নেই। এখানে সেতু না থাকায় তাদের ১০ কিলোমিটার ঘুরে সৈয়দপুর শহরে আসতে হয়। ব্রিজ নির্মাণ হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমবে।
সরেজমিন দেখা যায়, সৈয়দপুর উপজেলার ১ নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়নের পশ্চিম অসুরখাই ও পূর্ব অসুরখাই গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে চিকলী নদী। কামারপুকুর ইউনিয়নের পূর্ব অসুরখাই, কোরানীপাড়া, ফাজিলপুর, ঘোনপাড়া, মাঝাপাড়া, চেংমারীপাড়া, বানিয়াপাড়া, শাহপাড়া, সরকারপাড়া গ্রামসহ অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ সৈয়দপুর শহরে আসতে এই বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, আমি প্রতিদিন নদী পার হয়ে আসি, আবার নদী পার হয়ে যাই। নদীতে পানি বেড়ে গেলে পারাপারের সমস্যা হয়ে যায়। তখন প্রায় সাত কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তহিদুল ইসলাম বলেন, বর্ষাকালে কামারপুকুর ও কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের এই বাঁশের সাঁকো পার হতে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। এভাবেই চলে আসছে বছরের পর বছর। ভারী বর্ষণে প্রতি বছর সাঁকোটি পানিতে ভেসে যায়। বাঁশের সাঁকোটি চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
নীলফামারী সৈয়দপুর উপজেলা প্রকৌশলী এম এম আলী রেজা রাজু বলেন, গ্রামীণ সড়কে গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় তথ্য পাঠানো হয়েছে। এ মাসেই আমরা চিঠি পেয়েছি, পানি আইন ২০১৩ অনুসরণ করে কাজ করতে হবে।