ভাদ্র মাসের শুরুতে গ্রামে গ্রামে শুরু হয় ‘ভাদর কাটানি’ উৎসব। ভাদর কাটানির লক্ষ্যে বাবার বাড়িতে যান নববধূরা। বর্তমানে এ উৎসবে শিথিলতা এলেও মুছে যায়নি। নীরবে চলছে ‘ভাদর কাটানি’। স্বামীর মঙ্গল কামনায় গত বছরের আশ্বিন থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত বিবাহিত মেয়েদের অনেকে বাবার বাড়ি ফেরেন। নববধূকে বাবার বাড়িতে নেওয়ার এ রেওয়াজটি স্থানীয়দের কাছে ভাদর কাটানি উৎসব নামে পরিচিত। উৎসবের নিয়ম অনুযায়ী, ভাদ্র মাসের প্রথম দিন থেকে কমপক্ষে ১০ দিন স্বামীর মঙ্গল কামনায় নববধূ তার স্বামীর মুখ দর্শন করে না। এ মাসে বিয়ের তেমন আয়োজনও চোখে পড়ে না।
দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়সহ বৃহত্তর রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চলে এবং ভারতের পশ্চিম ও দক্ষিণ দিনাজপুর মালদহ এবং মুর্শিদাবাদের কিছু এলাকায় এ প্রথা আজও চালু আছে বলে জানা যায়।
নিয়ম অনুযায়ী, কনেপক্ষ শ্রাবণ মাসের দু-এক দিন বাকি থাকতেই বরপক্ষের বাড়িতে সাধ্যমতো বিভিন্ন রকমের ফল, মিষ্টি, পায়েসসহ নানা রকম পিঠাপুলি নিয়ে যায়। বরপক্ষও সাধ্যমতো তাদের আপ্যায়ন করে। কিছু এলাকায় এমন নিয়মও রয়েছে, ভাদ্র মাসে মামির হাতে ভাত খেতে হয়। কারণ ভাদ্র মাসে নানা অসুখবিসুখ লেগে থাকে। তাই বড়দের মতে, মামির হাতে ভাত খেলে বাকি ১১ মাস ভালো থাকা যায়। বীরগঞ্জের গোলাপগঞ্জ বাজারের রেজাউল ইসলাম জানান, ‘ভাদর কাটানি’ মুসলিম সম্প্রদায়ের কোনো ধর্মীয় বিষয় না। একসময় সম্ভ্রন্ত হিন্দু সম্প্রদায় এ উৎসবকে জাঁকজমকভাবে পালন করত।
তাদের এ রেওয়াজ বা রীতি বংশানুক্রমে উত্তরাঞ্চলের মানুষকে প্রভাবিত করে। আগে নববধূরা গরুর গাড়িতেই যাতায়াত করতেন, যদিও এখন ভিন্ন ভিন্ন যানবাহনে চলাচল করেন।