রাজশাহীর দুর্গাপুরে বৃহস্পতিবার খাদ্য গুদামে ভালো চালের সঙ্গে নিম্নমানের চাল মিশিয়ে বিতরণ করা হচ্ছিল খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগী হতদরিদ্রদের মাঝে। বিষয়টি নজরে আসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। তিনি খাদ্য গুদামে অভিযান চালিয়ে দেখেন বিপুল পরিমাণ পচা চাল সংরক্ষণ করা হয়েছে। শুধু দুর্গাপুর নয়, রাজশাহীর সব খাদ্য গুদামে ভালো চালের সঙ্গে পচা চাল সংরক্ষণ করা হয়েছে। বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকারি খাদ্য গুদামে ৭০-৮০ ভাগ পচা চাল দেখতে পান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম জানান, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুফলভোগীদের মাঝে বিতরণের জন্য চাল সংরক্ষণ করা হয়। কিছুদিন থেকে সুফলভোগীরা চাল খেতে না পারায় প্রশাসনের কাছে মৌখিক অভিযোগ করছিলেনন। এর ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার খাদ্য গুদাম পরিদর্শনে যান উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ সময় উপজেলার চারটি খাদ্য গুদামে গিয়ে ধান এবং চালের বস্তা দেখেন।
গুদামে থাকা ধান এবং চাল পচে নষ্ট হয়ে গেছে। ধান এবং চালের মান ঠিক আছে কি না জানার জন্য কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
বাগমারা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়া দাবি করেন, এত চাল দেখে নেওয়া সম্ভব হয় না। পাশাপাশি চালগুলো বিভিন্ন ঠিকাদারের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। ট্রাক ভর্তি করে চালের বস্তা আনা হয় খাদ্য গুদামে।
এ অনিয়মের ঘটনায় চারটি গুদাম সিলগালা করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নবী নওয়াজেশ আমিন বলেন, ‘উপজেলা খাদ্য গুদামে কখন কী পরিমাণ চাল বা ধান গুদামজাত করা হচ্ছে তা মূলত যিনি গুদাম কর্মকর্তা তিনি দেখেন এবং বুঝে নেন। কী পরিমাণ চাল নষ্ট হলো এটি আসলে বলা সম্ভব হচ্ছে না।’
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা শারমিন জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় উপজেলার সাত ইউনিয়নে উপকারভোগীদের মাঝে চাল বিতরণের সময় তাঁর কাছে অভিযোগ আসে। গুদাম পরিদর্শনে গিয়ে খাওয়ার অনুপযোগী বিপুল পরিমাণ নিম্নমানের চাল দেখতে পেয়েছেন। ১৩২ বস্তা নিম্নমানের চাল জব্দ করে ভালো চাল থেকে আলাদা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।