চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে অনুমোদিত শয্যা ৪০টি। ওয়ার্ডের উদ্যোগে বাড়ানো হয়েছে আরও ৩৬টি। কিন্তু অনুমোদিত ৪০ শয্যার রোগীর ওষুধ দেওয়া হয় ৭৬ জনকে। এরপরও শয্যার বাইরে ফ্লোর-মেঝেতে রোগী ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শিশু সার্জারি বিভাগে নানামুখী সংকট রয়েছে। একটা আছে তো আরেকটা নেই। ফলে তালি জোড়া দিয়েই চলছে বিভাগটি। এর খেসারত দিতে হয় রোগীদের। পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ।
হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. গোলাম হাবিব বলেন, ‘অতি প্রয়োজনীয় অনেক কিছুরই সংকট আছে এই বিভাগে। তবুও আমরা বিদ্যমান জনবল, ওষুধ ও চিকিৎসা উপকরণ দিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তাতে রোগীদের অনেক কষ্ট হয়ে যায়। কারণ এখানকার অধিকাংশ রোগীই গরিব। তিনি বলেন, অধ্যাপকের পদ থাকলেও এখন তা শূন্য। বর্তমানে সহযোগী অধ্যাপক আছেন ছয়জন, সহকারী অধ্যাপক আছেন তিনজন, কনসালটেন্ট আছেন তিনজন, সহকারী রেজিস্ট্রার আছেন দুজন এবং নার্স আছেন ২২ জন। ওয়ার্ডে তিন শিফটে ১২ জন ওয়ার্ড বয় দরকার হলেও এখন আছে মাত্র একজন। একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী থাকলেও তাকেই সব কাজ করতে হয়।’ সরেজমিন দেখা যায়, শিশু সার্জারি বিভাগটির অবস্থান হাসপাতালের কার্ডিয়াক ভবনের নবম ও দশম তলায়। ওয়ার্ডে নেই পানির কোনো ব্যবস্থা। রোগীর পানির প্রয়োজন হলে নামতে হয় নিচে। বিভাগীয় প্রধানের উদ্যোগে একটি ফিল্টার বসানো হলেও মেরামতের অভাবে সেটিও নষ্ট হয়ে যায়। দুটি লিফটের মধ্যে একটি দীর্ঘদিন ধরেই নষ্ট। একটি দিয়ে হুড়োহুড়ি করে সবাইকে ওঠানামা করতে হয়। অধিকাংশ বাতিই নষ্ট। ফলে রাত নামলে অনেক সময় ধরে অন্ধকারে থাকতে হয়। ফ্যান থাকলেও অনেকগুলোই নষ্ট। আছে বাথরুম সংকট। একজন সার্জারির শিশু রোগীকে ভর্তির পর থেকে অপারেশনের আগে-পরে অন্তত ২০ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত হাসপাতালে অবস্থান করতে হয়। এ সময় রোগীর স্বজনদের বাইরে, মেঝে ও সিঁড়িতেই দিনের পর দিন অবস্থান করতে হয়। সামনের সিঁড়ির থাই গ্লাস গত আট মাস আগে বৃষ্টির সময় ভেঙে যায়। বৃষ্টি হলেই সিঁড়ি বেয়ে পানি প্রবেশ করে। সাতজন নিরাপত্তা প্রহরীর প্রয়োজন হলেও বর্তমানে একজনও নেই। ফলে অপারেশনের রোগীর শয্যায় বসেই স্বজনরা ইচ্ছামতো গল্প এবং বাইরে থেকে আসা-যাওয়া করে। ফলে ইনফেকশনের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।