অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বহুল আলোচিত লন্ডন বৈঠকের শুরুতে কথোপকথনের সময় বগুড়ার একটি পার্কের কথা উঠে এসেছিল। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনের আবহাওয়া ও পার্ক নিয়ে কথা বলার সময় প্রধান উপদেষ্টাকে বগুড়ায় একটি হাঁটার জায়গা করেছিলেন বলে জানান। গত ২০ বছরের অবহেলায় সেই পার্কটি এরই মধ্যে জঙ্গলে পরিণত হয়েছে।
১৩ জুন লন্ডনে বৈঠকের সময় বগুড়ায় হাঁটাহাঁটির এ পার্কের কথা তুলে ধরায় বগুড়ার মানুষ আবেগাপ্লুত, আনন্দিত। তারা বলেছেন, তারেক রহমানের রক্তে মিশে আছে বগুড়ার মাটি ও মানুষের আবেগ। জানা যায়, ২০০৪ সালে বগুড়ায় মানুষের হাঁটার জন্য তারেক রহমানের অনুপ্রেরণায় গড়ে তোলা হয়েছিল এ পার্কটি। শাজাহানপুর উপজেলার শাকপালা মৌজায় প্রায় ৭.০৪ একর জমির ওপর পুকুরসহ পার্কে হাঁটার জন্য ইটের সোলিং (সিসি) রাস্তা নির্মাণ করা হয়। বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বসানো হয় ছাতা ও বেঞ্চ। পার্কটি নির্মাণের পর স্থানীয় মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে পার্কটি। চারদিকে গাছগাছালিতে ভরা মনোরম পরিবেশের কারণে বিনোদনের অন্যতম স্থানে পরিণত হয়।
বগুড়া শহরতলির শাকপালা এলাকায় তিন রাস্তার মোড়ে ত্রিভুজ আকৃতির এ দৃষ্টিনন্দন পার্ক নির্মাণ করে স্থানীয় সড়ক বিভাগ। সেখানে একটি ফলকও ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে গত ২০ বছরে অযত্ন-অবহেলায় পড়েছিল পার্কটি। সেটি এখন রীতিমতো অপরিষ্কার ও জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। স্থাপনাগুলোও ভেঙে গেছে। পার্কটিতে বসে বিশ্রামের জন্য থাকা শেডগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে।
শাকপালা এলাকার বাসিন্দা শাহিন মণ্ডল জানান, বিএনপি সরকারের আমলে এ পার্কটি দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা হয়েছিল। পার্কে তারেক রহমানের একটি নাম ফলকও উন্মোচন করা হয়েছিল। বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল মনসুর আহমেদ জানান, শাজাহানপুর উপজেলার শাকপালা মৌজায় প্রায় ৭.০৪ একর জমির ওপর পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে। আবদুস সাত্তার নামে একজন মালী নিয়মিত এটি দেখভাল করতেন। তার অবসর গ্রহণের পর দীর্ঘদিন অরক্ষিত ছিল পার্কটি। সড়ক বিভাগ এবং জেলা প্রশাসক পার্কটি পরিদর্শন করেছে।
বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজ জানান, বগুড়ার এ পার্কটির কথা আমি শুনেছি। পরিদর্শনও করা হয়েছে। দ্রুত সময়ে এটি দৃষ্টিনন্দন করা হবে। লন্ডনে বগুড়ার এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মোশারফ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে গত ২০ বছরে অযত্ন-অবহেলায় পড়েছিল পার্কটি। আমরা যতদ্রুত সম্ভব পার্কটি দৃষ্টিনন্দন করার দাবি জানাচ্ছি।
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র রেজাউল করিম বাদশা জানান, তারেক রহমানের আবেক মিশে আছে বগুড়ার মাটি ও মানুষের সঙ্গে। যে কারণে তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে এ পার্কের বিষয়ে বলেছেন।