চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রক্টর ও রেজিস্ট্রারের দ্রুত পদত্যাগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। অন্যদিকে চাকসু নির্বাচন বানচালের অভিযোগ তুলে ঝটিকা মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্রদল। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টায় চাকসু ভবনের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রশিবির।
অবস্থান কর্মসূচিতে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের পদত্যাগ দাবি করেন। এসময় তারা স্লোগান দেন, “দলবাজ রেজিস্ট্রার, এই মুহূর্তে গদি ছাড়,” “চাপ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবেনা,” “হানি ট্র্যাপের প্রক্টর মানি না, মানবো না।”
ছাত্রদল নেতাদের অভিযোগ, প্রক্টর একটি দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিয়মিত উপস্থিত থাকেন এবং তিনি চাকসু নির্বাচনের সঙ্গেও জড়িত। এতে তাদের অংশগ্রহণ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া রেজিস্ট্রার ছাত্রদল নেতাদের উদ্দেশে কটূক্তি করেছেন এবং আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ তাদের। ছাত্রদল দাবি জানায়, দলবাজ ও ব্যক্তিত্বহীন প্রক্টর-রেজিস্ট্রারকে দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে।
অন্যদিকে ছাত্রশিবিরের অভিযোগ, প্রক্টরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ভিত্তিহীন। ছাত্রশিবিরের মতে, চাকসু নির্বাচন বানচাল করতেই ছাত্রদল এমন অভিযোগ তুলছে। তাদের বক্তব্য, বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা তো নিয়মিত প্রোগ্রামে থাকেন, তাতে কোনো সমস্যা দেখা দেয় না, অথচ প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে ষড়যন্ত্রমূলক উদ্দেশ্যে।
শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়, চাকসুর গঠনতন্ত্র পরিবর্তন, দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা এবং দলবাজ প্রক্টর-রেজিস্ট্রারের পদত্যাগের দাবিতে আমাদের কর্মসূচি।”
ছাত্রদল সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন বলেন, “রেজিস্ট্রার আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন। কিন্তু কাদের বিরুদ্ধে নেবেন তা আমরা বুঝিনি। চাকরির কমিটি তো রেজিস্ট্রারের সাইনেই হয়েছে। প্রতিবাদ করলে তা অশালীন মন্তব্য দিয়ে উড়িয়ে দেয়া হয়েছে, যা আমরা নিন্দা জানাই।”
অপরদিকে শাখা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক মো. ঈসহাক ভূঁঞা বলেন, “আমাদের দীর্ঘ কর্মসূচির পর চাকসুর তফসিল ঘোষণার তারিখ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একটি সংগঠন চাকসু নষ্ট করতে চাচ্ছে। নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র আমরা মেনে নেব না।”
ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, “গত কয়েকদিনে আমরা দেখেছি, একটি সংগঠন অযৌক্তিক ইস্যু টেনে চাকসু বানচালের চেষ্টা করছে। চাকসু বানচালের পাঁয়তারা কোনোভাবেই মানা হবে না।”
চবি রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, “চাকসু নির্বাচনসংক্রান্ত কোনো কর্মকাণ্ডে আমি জড়িত নই। আমাকে সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব এসেছিল, আমি গ্রহণ করিনি। অথচ ছাত্রদল আমাকে নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে। আমি কেবল বলেছিলাম, তারা যদি সত্যিই চবির শিক্ষার্থী হয়ে থাকে, তাহলে চাকসু সম্পর্কিত বিষয় তাদের জানাই উচিত। সেই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই এখন আমার পদত্যাগ দাবি করছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।”
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল