স্লোগানে স্লোগানে গতকাল দিনভর উত্তাল ছিল কাকরাইল। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ পাঠ করানো এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করেছেন ইশরাক সমর্থকরা। পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। তবে বিকালে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একটি গণতান্ত্রিক, নিয়মতান্ত্রিক দল; যারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে। হাই কোর্টের আদেশ শোনার পর দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে আপাতত আমার আন্দোলন স্থগিত রাখব। সরকারকে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হবে, তারা কী করে, তাদের কর্মকান্ডের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী কার্যক্রমের নির্দেশনা আসবে।’ ইশরাক বলেন, ‘আমি আসার সময় আমাদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। হাই কোর্টে একটি ভুয়া রিট, বলা যায় সেই রিট দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আমাকে মেয়র পদে শপথ করানো থেকে বাধাগ্রস্ত করানোর একটা অপচেষ্টা করা হয়েছিল। সবশেষে আইনের শাসনের বিজয় হয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেহেতু আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আশা রাখব সরকার আর এক দিনও কালক্ষেপণ না করে, অবিলম্বে আদালতের রায় বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে তাদের আগামী দিনের এজেন্ডা জনগণের কাছে ফুটিয়ে তুলে ধরবে। আজ যেহেতু আমরা রায়টি পেয়েছি, যদি সরকার আবারও টালবাহানা করে, তাহলে কাল সকালে আমরা আবার এখানে এসে ঘেরাও দেব।’ ইশরাক বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল এটা নিয়ে নানান ধরনের বিভ্রান্তিকর লেখা লিখছে। পোস্ট দিচ্ছে। ভুল আইনি ব্যাখ্যা দিচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস, উনি সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। উনাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা বলতে চাই, উনার আশপাশে যে কুলাঙ্গার রয়েছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের আপনি অপসারণ করে একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেন।’ এর আগে বুধবার সকাল থেকে ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে কাকরাইলে অবস্থান নেন তাঁর সমর্থকরা। তাঁরা সারা রাত সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং ইশরাকের শপথ আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এ সময় ‘যমুনারে যমুনা, শপথ ছাড়া যামু না’, ‘এই মাত্র খবর এলো, ইশরাক ভাই মেয়র হলো’, ‘দফা এক, দাবি-নির্বাচিত সরকার’সহ বিভিন্ন স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।