এই সরকারের ভেতর সরকার আছে। যারা পরিবর্তনে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। যাদের অনেক প্রতিনিধি এই সরকারে রয়েছে। একটি মিডিয়া হাউজে গিয়ে একদিন দেখলাম দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এই কথাটি বলেছিলেন, যখন সবার মনে হতে লাগল, সরকারের ভেতর সরকার আছে।
সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডক্টর আ ন ম এহসানুল হক মিলন একটি টক শো অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি যদি জনগণকে জিজ্ঞেস করি কী অবস্থা? কেমন আছেন? তারা বলবে, আগে ছিলাম একপেশি প্রেসারে এখন আছি চতুর্দিকের প্রেসারে। চতুর্দিক বলতে তারা বুঝাতে চাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগ নেই। প্রচ্ছন্নভাবে তারা অন্য জায়গায় মিশে আছে। এখন সবাই মিলে জনগণকে প্রেসার দিচ্ছে। এই প্রেসারের মাঝে সরকারের ভেতরে সরকার নিশ্চয়ই আছে। তা না হলে ড. ইউনূস সাহেব কেন সব কথা খোলামেলা বলতে পারছেন না? কেন তার নির্দেশে কাজ হচ্ছে না? কেন তিনি একটির পর একটি নতুন উপসর্গ এনে নির্বাচনকে পেছাচ্ছেন? এই সরকারের দুর্বলতা ক্রমান্বয়ে বেরিয়ে আসছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগে ছিল অল্প সংস্কার। মোটামুটি একটা সংস্কার হলে নির্বাচন ডিসেম্বর, ফেব্রুয়ারি কিংবা জুনে। এখন উনি (ইউনূস) তো বলছেন গভীরতম সংস্কার। এই যে গভীরতম সংস্কার, এ কথাটি আবার আমাদেরকে একটু চিন্তায় ফেলে দেয়। কারণ আগে তিনি যে অবস্থানে ছিলেন, সেই অবস্থান থেকে আরো ব্যাপকভাবে অন্যদিকে তাকাচ্ছেন। এর কারণ বোঝা যাচ্ছে না। উনার সিদ্ধান্ত আমরা দেখছি না তেমন। আসলেও সরকারের ভেতর সরকার আছে তবে তারা কারা? এটা নিশ্চিত বলতে পারছি না। কিন্তু সরকারকে সাহায্য করার জন্য বাইরে থেকে কিছু গ্রুপ কিভাবে সিলেক্ট হয়েছে, এটা আমরা দেখেছি। এই গ্রুপ অফ সিলেকশন-এর বেশিরভাগ একটি জায়গা থেকে আসছে, তাদের ভেতরে অন্য চিন্তাভাবনা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আরেকটু সময় দিন সব পাওয়া যাবে। এখন যে জায়গাটি এসে আমরা চিন্তিত হয়েছি সেটা হলো, ইউনূস নির্বাচনের তারিখ সঠিকভাবে ডিক্লেয়ার দিতে পারছেন না। ভাবছি ৫ই আগস্ট তিনি দেবেন। কারণ মোটামুটি সংস্কার হয়েছে বা আমি বলব যে, এই ছয় মাসে যে সংস্কার হয়েছে এটা মনে হয় বিশ্বে দ্রুততম কোনো সংস্কার। একটি দেশের জন্য একটি রাষ্ট্রের জন্য হয়েছে। যে রাষ্ট্রটি ৫৩ বছর আগে সৃষ্টি হয়েছিল। এত দ্রুততম সংস্কার হওয়ার পরেও আমরা দেখছি বিভিন্ন কারণে ওয়াকআউট করতে হচ্ছে। তাহলে এগুলো কি সংকেত নয়? সব জায়গায় আমরা ঐক্যমত হতে পারছি না। সেগুলো আমাদেরকে খুব মাইক্রোস্কোপিক আই দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই সরকারের ব্যর্থতার ঝুড়ি ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাচ্ছে সফলতার চেয়ে। সেইদিকে যদি আমরা তাকাই তাহলে নির্বাচন একমাত্র সমাধান। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে পাঁচ তারিখে উনার (ইউনূস) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ পর্যন্ত। সেই ভাষণের পরে আমরা বুঝতে পারব সরকারের ভেতর সরকার কোন দিকে যেতে চাচ্ছে।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল