ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ডিএন ডিগ্রি কলেজে উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) বিএ ও বিএসএস শেষ বর্ষের পরীক্ষায় শিক্ষকরা দাঁড়িয়ে থেকে উম্মুক্ত নকল করার সুযোগ করিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কারও সামনে বইয়ের ছেঁড়া পাতা, কারও সামনে পুরা বই খোলা। তা দেখে উত্তরপত্রে লিখছে পরীক্ষার্থীরা। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) অধীনে চলমান বিএ এবং বিএসএস শেষ বর্ষের পরীক্ষায় আজ শুক্রবার ডিএন ডিগ্রী কলেজের একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে এমন চিত্র দেখা গেছে।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গত ১৯ সেপ্টেম্বর এসব পরীক্ষা শুরু হয়। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এই কেন্দ্রে প্রায় ৩১৫ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে।
আজ ২৬ 'সেপ্টেম্বর শুক্রবার পরীক্ষার সময় বেলা ১১টার দিকে পীরগঞ্জ উপজেলার ডিএন, ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা চলছে। মূল ফটকে লেখা নকল মুক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র। ভিতরে চলছে প্রকাশ্যে নকল, এসব নকল সরবরাহ করছে খোদ শিক্ষকরাই। পরীক্ষার্থীরা অবাধে বইয়ের পাতা বেঞ্চের ওপরে রেখে তা দেখে উত্তরপত্রে উত্তর লিখছে। আবার কেউ পুরো বইটাই বেঞ্চের ওপর রেখে উত্তরপত্রে উত্তর লিখছে। কোথাও আবার একজন পরীক্ষার্থীর সামনে থাকা বইয়ের পাতা দেখে কয়েকজন উত্তর লিখছে। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের তা প্রতিরোধে তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। পরীক্ষার কেন্দ্রে এই প্রতিবেদককে ঢুকতে দেখে কেন্দ্রে পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন শিক্ষক এগিয়ে আসেন। সে সময় কেন্দ্র সচিব "অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে তালাবন্ধ করার চেষ্টা করেন। এসময় তিনি বলেন, আমার কেন্দ্রতে আমি যা খুশি ইচ্ছেমত তাই করবো। আপনাদের এখানে আসতে কে অনুমতি দিয়েছে।
তাদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, যাদের কোনো উপায় নেই তারাই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হয়। শিক্ষা নয়, সনদ হাতে পাওয়াটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। এসব কারণে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষকদের কিছুটা ছাড় দিতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলে সুযোগ সুবিধা দেয়ার জন্য প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর নিকট হতে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। এছাড়াও প্রতি পরীক্ষায় প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমানে টাকা নেয়া হয়।
সরকারি ভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একজন ট্যাগ অফিসার দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, আমি এসিল্যান্ড সাহেবকে পাঠাচ্ছি তিনি গিয়ে ব্যবস্থা নিবেন।
এ বিষয়ে বাউবি পরীক্ষায় দায়িত্বে থাকা ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি) মেহেনাজ ফেরদৌস বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল