এশিয়া কাপ ফুটবলে চূড়ান্ত পর্বে খেলাটা বাংলাদেশের কাছে স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ হকিতে ১৯৮২ সাল থেকে নিয়মিত এশিয়া কাপ খেলছে। বাংলাদেশ কখনো এশিয়া কাপে সুযোগ পাবে না তা স্বপ্নেও ভাবা যায়নি। এটা মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অথচ আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠেয় আসরে দেখা মিলবে না। ওমান ও চাইনিজ তাইপে খেলবে কিন্তু বাংলাদেশ নেই। এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়ার পথটি একেবারে সহজ ছিল তাও কাজে লাগাতে পারেনি। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় বসেছিল এএইচএফ কাপের আসর। যাকে এশিয়া অঞ্চলের এশিয়া কাপ বাছাইপর্বও বলা যায়। টুর্নামেন্টে দুটি গ্রুপে বাংলাদেশ ছিল ‘বি’তে। যেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে ছিল কাজাখস্তান, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। প্রতিটি ম্যাচ জিতেই সেমিফাইনালে জায়গা করে নেন পুস্কর ক্ষিসা মিমোরা। শক্তির বিচারে টুর্নামেন্টে অনায়াসে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এশিয়া কাপ টিকিট পাওয়ার কথা। অথচ সেমিফাইনালে ওমানের কাছে হেরেই এশিয়া কাপে নেই। প্রশ্ন হচ্ছে কেন এ বিপর্যয়। এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। এখানে সমস্যাটা কী? ওমান দুর্বল প্রতিপক্ষ হলেও তাদের আবার বাংলাদেশকে হারানোর অভিজ্ঞতাও রয়েছে। এমন প্রতিপক্ষকে হারাতে কোচের ছক ও পরিকল্পনা তো আঁকতে হবে। তা কি করা হয়েছিল? এমন ব্যর্থতায় জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় ও হকি ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদ এ এ আদেল বিস্মিত। তিনি টুর্নামেন্ট দেখতে নিজ উদ্যোগে ইন্দোনেশিয়ায় যান। মুঠোফোনে গতকাল সাজেদের সঙ্গে কথা হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘হারের জন্য টিম ম্যানেজমেন্টই দায়ী। ওমানের বিপক্ষে ম্যাচের আগেরদিন আমি দলীয় ম্যানেজার জাতীয় দলের সাবেক তারকা খেলোয়াড় বায়োজিদ হায়দারের কাছে জানতে চাই সেমিফাইনালে প্রস্তুতি কেমন। প্রতিপক্ষের কৌশলের ভিডিওক্লিপ খেলোয়াড়রা দেখেছে কি না। উনি যা বললেন তাতে আমি অবাক হয়ে যাই। ম্যানেজার জানালেন, যেহেতু প্রতিযোগিতার পরে সময় পাওয়া যাবে না তাই শপিং করার জন্য ছুটি দেওয়া হয়েছে। এতে সবাই চাপমুক্ত থাকবে।’
সাজেদ বলেন, ‘সেমিফাইনালের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। যেখানে হারলেই এশিয়া কাপ খেলবে না। সেখানে কি না কলাকৌশল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা না করে সবাইকে মার্কেটে পাঠানো হলো। বিশ্রামের জন্যই তো ম্যাচের আগেরদিন অনুশীলন রাখা হয়নি। সেখানে মার্কেটে ছোটাছুটি করতে উল্টো খেলোয়াড়রা ক্লান্ত হয়ে পড়লেন। মাঠে তার প্রভাব পড়েছে বলেই তো হেরে গেছে। ৪৩ বছর পর এশিয়া কাপ না খেলার পেছনে দলের ম্যানেজমেন্টকে দায়ী করব। এ লজ্জা তো পুরো জাতির। সামনে বাংলাদেশের হকির জন্য আরও ঝুঁকি বাড়বে। পেছনে থাকা ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের মান যে বেড়েছে তা গ্রুপ ম্যাচেই প্রমাণ পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক হকি বলতে জাতীয় দল তো শুধু এশিয়া কাপ খেলত। এখন তাও বাদ। জানি না বিষয়টি অ্যাডহক কমিটি কীভাবে দেখছে। কাজাখস্তানকে হারিয়ে তৃতীয় হয়েছি এটাই কি ফেডারেশনের বড় প্রাপ্তি!’