নিজের মনোবল, আত্মবিশ্বাস আর দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দরিদ্রতাকে পেছনে ফেলে স্বাবলম্বী হয়েছেন রফিকুল ইসলাম। সব ধরনের মোটরসাইকেলের দেবে যাওয়া, দুর্ঘটনায় দেবে যাওয়া, রং নষ্ট হওয়া তেলের ট্যাংকি মেরামতসহ নতুনের মতো রং করার কারখানা গড়েছেন চিরিরবন্দরের রানীরবন্দরের মেকানিক রফিকুল ইসলাম। এখন তার কারখানায় ৭/৮ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। এখন তার মাসে আয় প্রায় লক্ষাধিক টাকা। দরিদ্রতা দূর করে জমি কিনেছেন, বাড়ি করেছেন। সবার কাছে তিনি আইকন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
দীর্ঘ ১৫ বছর সফলতা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে এ কাজ করে যাচ্ছেন রফিকুল ইসলাম (৩০)। বগুড়া, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, নওগাঁ, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, টাঙ্গাইল জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্যাংকি মেরামতে মোটরসাইকেল চালকরা আসেন। রফিকুল ইসলাম আট/নয় বছর বয়সেই বাবা অসিরউদ্দিনকে হারান। এরপর সংসারে নেমে আসে দরিদ্রতা। তখন মা স্থানীয় তাঁতশিল্পে কাজ করে ছেলেমেয়েদের বড় করেন। তখন বিভিন্ন মোটরসাইকেলের দোকানে কাজ করতেন। এখন বোনের বিয়ে দিয়েছেন। সংসারের অভাব দূর করেছেন।
রফিকুল ইসলাম জানান, কাজটি আমি বিভিন্ন মেকানিকের দোকান থেকে শিখেছি। আবার দুই-একবার ভারতে গিয়েও এটি দেখেছি। কিছু ট্যাংকি ঠিক করতে কমপক্ষে ১৫ দিন সময় লাগে। কিছু সঙ্গে সঙ্গে বা ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই সারিয়ে দেওয়া যায়।
খরচের ব্যাপারে বলেন, একেক কাজ একেক দামে করা হয়। ট্যাংকি দেখে দাম নির্ধারণ করা হয়। তারপরও ট্যাংকির ফুটো বন্ধ ও রং করানোসহ ৩ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। গ্রাহককে ট্যাংকি মেরামতের সময় পর্যন্ত চলার জন্য বিকল্প ট্যাংকি দেওয়া হয়। পুরো গাড়ি রং করাতে খরচ বেশি পড়ে। তবে ১০/১২ বছর গ্যারান্টি দেওয়া হয়।
রংপুরের গংগাচড়া থেকে আসা আমিনুল ইসলাম জানান, খোঁজ পেয়ে এখানে এসেছিলাম। সড়ক দুর্র্ঘটনায় বাইকটির ট্যাংকি দেবে গেছে ও ফুটো হয়েছিল। ১৭ দিন আগে দিয়ে গিয়েছিলাম। আজ ডেলিভারি নিলাম। নতুনের মতো লাগছে। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে এখানে মানুষ আসে। এখানে বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাজ করা হয়।