গল্প
ঘুম থেকে উঠে প্রশস্ত বারান্দায় যেতেই মন্দিরার মন ভালো লাগায় ভরে গেল।
টবে ফোটা গোলাপের একটা মিষ্টি গন্ধ বারান্দার ভোরের বাতাসে ছড়িয়ে আছে। তারই সৌরভ ওর শরীর ও মনে ছড়িয়ে গিয়ে সকালটা অন্যরকম করে দিল। মন্দিরার পরম ভালোবাসার এক চিলতে বাগানজুড়ে আছে কেবল চারটি গোলাপের গাছ।
তিনটি লাল আর একটি সাদা। যখন নার্সারি থেকে সে চারাগুলো কেনে তখন বিক্রেতা বলেছিল, এরা ইরাকের বসরা জাতের গোলাপ। যেমন বড় হয় তেমন সৌরভ। বিক্রেতার কথা শুনে মন্দিরা একই বয়সের চারাগুলো কিনে আনে। মনের ইচ্ছেটা ছিল এমন, যেন ফুল ফুটলে একসঙ্গে তিনটি লাল আর একটি সাদা গোলাপ ফোটে।
তা-ই হয়েছে। দিনে দিনে একসঙ্গে বড় হয়ে ওঠা চারাগুলোতে একটা করে কলি মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। ধীরে ধীরে সে কলি পুষ্ট হয়েছে। সবুজের আড়াল থেকে লাল সাদা পাপড়ি দেখা গেল যেন চিকের পর্দা ফাঁক করে প্রেমিকের চলে যাওয়া দেখছে কোনো অনিন্দ্যসুন্দরীর পটোলচেরা চোখ। এক রাত যেতে না যেতেই সে কলি আজ মনোলোভা সুন্দরীর মনকাড়া হাসির মতো ফুটে আছে। বড় গোলাপের ভারে সব কটা গাছের ডাল ঈষৎ নুয়ে পড়ে সকালের মৃদুমন্দ বাতাসে নড়ছে।
দেখেই যেন ওরা মন্দিরাকে ডাকল, এসো এসো।
তর সইল না। তিনটে লাল আর একটা সাদা গোলাপের এমন প্রসন্ন হাসিমুখ মন্দিরা ফেসবুকে পোস্ট করল। অবশ্য তার আগে এ গোলাপের পুষ্ট কলির ছবিও সে পোস্ট করেছিল। তখন মন্দিরার এক কবিবন্ধু মন্তব্য লিখেছিলেন-
‘কলি হচ্ছে সেই কথাটি, যে কথাটি হয়নি বলা। বলার অপেক্ষায়।’ আর আজ পরিপূর্ণ গোলাপের ছবি পোস্ট দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই বন্ধুটি লিখে পাঠালেন, ‘সেই কথাটি হলো বলা। মন আছে যার, আছে হৃদয়, সে শুনেছে।’
মন্তব্যটি পড়েই মন্দিরার মন উচাটন হলো। সে তো এভাবে ভাবেনি! যদি কেউ ভাবে তো দোষেরই বা কী!
মন্দিরার খুব কাছের তিনজন ছেলেবন্ধু আছে। ফেসবুক বন্ধুর মন্তব্য পড়ে মনে হলো, তাই তো!
ওর বন্ধুদের কেউ কি এভাবে ভেবেছে! যদি ভেবে থাকে আর তাকে এভাবে মনের কথাটা জানিয়ে দিত, অথবা জানিয়ে দেয়, তাহলে সে কি তাকে ফিরিয়ে দেবে, না ফেরাতে পারবে?
মন্দিরা এবার সত্যিই ভাবল, এমন যদি হতো, মন্দ হতো না।
দুই
মন্দিরার তিনজন ছেলেবন্ধু একসঙ্গে কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং, কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বেরিয়েছে বছরখানেক হলো। তার পরে বছর ধরে যে-যার মতো কর্মজীবনে লেগে আছে। চাকরি নিয়ে দিন গড়াতে শুরু করতেই পরিবারের দিক থেকে চাপ এসেছে। নিজের দিক থেকেও তাগিদ আছে। বিয়ে করার। ঘর বাঁধার।
তো এখনই সময় পছন্দের যদি কেউ থেকে থাকে তাহলে কিছু বলার। যে কথাটি গোপনে গোপনে থাকে বুকের ভিতর, এ বয়সে সবার, কুঁড়ি মেলে কিন্তু মুখে পাপড়ি মেলে না। এখনই সময়।
মন্দিরার মাঝে মাঝে মনে হয়, বন্ধু তিনজনই বুঝি একজন আরেকজনকে বুঝতে না দিয়ে মন্দিরার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আর মন্দিরাও যে কাকে হাতে নেবে, কার গলায় মালা পরাবে ভেবে ভেবে নিশ্চিত হতে পারে না। তিন বন্ধুই তার পছন্দের। কাকে ফেলে কাকে রাখে সে! এসব কথা যখন তার বুকের ভিতরে বুদ্বুদ হয়ে ফুটতে শুরু করেছে, তখন একদিন সকাল ৯টার দিকে কলিং বেল বাজাল প্রিয়ম। তিনজনের একজন।
মাল্টিন্যাশনাল অয়েল কোম্পানিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার। বুয়েট থেকে বেরিয়েই ঢুকেছে। কিছুটা বাবার সুপারিশ আর বাকিটা নিজের যোগ্যতা মিলিয়ে পা এখন তার সামনে।
মন্দিরা তখন নাশতা খেয়ে ওর বারান্দার এক চিলতে বাগানে গোলাপ গাছের সামনে ফাঁকা জায়গায় পাতা ইজি চেয়ারে দোল খাওয়া থামিয়ে চা খাচ্ছিল। বেল বাজার শব্দে সে নিজেই চায়ের কাপ হাতে এগিয়ে গেল। দরজা খুলে প্রিয়মকে দেখে মন্দিরা অবাক। কী রে তুই! এত সকালে কী মনে করে? আয়, ভিতরে আয়।
প্রিয়ম কুণ্ঠিত পায়ে ঘরে ঢোকে। যদিও সে বরাবর সপ্রতিভ। কৈফিয়ত দেয় যেন,
-না এমনিতেই। অফিসে যাওয়ার আগে মনে হলো তোকে একটু দেখে যাই, অনেক দিন দেখা হয় না। এই আর কি-
মন্দিরা প্রিয়মের জবাব শুনে ভ্রু কুঁচকে বলে,
-কই, এই তো সেদিনই না দেখা হলো। তোরা তিনজনই তো ছিলি। সে যাকগে, ভালোই হলো, এসেছিস যখন বোস, চা খা। তারপর অফিসে যাস।
প্রিয়ম বসে না। সোফার কাছে দাঁড়িয়ে থেকে উশখুশ করে। হাত কচলায়। মন্দিরা ওর এ দ্বিধান্বিত ভাবের অর্থ খুব ভালোই বোঝে। মুখের হাসি লুকিয়ে রেখে বলে, -কিছু বলবি? তো বোস না। দাঁড়িয়ে রইলি কেন?
অগত্যা যুবক ধপাস করে সোফায় বসে। কিন্তু বসাটা ঠিক আরামের হলো না। প্রিয়মকে ওই অবস্থায় রেখে মন্দিরা চা আনতে গেল। সময় নিল। চা আনতেই প্রিয়ম খেলো কি খেলো না, হুড়মুড় করে আবার উঠে দাঁড়াল। টিস্যুতে মুখ মুছতে মুছতে বলল,
-মন্দিরা, যাই তাহলে-
-তো কিছু বললি না! যা বলবি বলে এসেছিলি-
-নাঃ, তেমন কিছু না। যাই তাহলে।
মন্দিরা হাসিমুখে মাথা নাড়ে। প্রিয়ম বের হতে গিয়ে টি-পয়ে পা আটকে হোঁচট খায়। কোনোরকমে পতনের হাত থেকে বেঁচে যায়। হুড়মুড় করে বেরিয়ে গেল।
এভাবে প্রিয়মের চলে যাওয়ার পর মন্দিরা ভাবল, বাকি দুজনের একজন অনিকেত অন্যজন বারিষ, তারাও কি আসছে, আগে আর পরে যে কোনো একদিন!
তিন
প্রিয়মের দিন দুই পর এলো অনিকেত। সে সরকারের বা কারও গোলামি করবে না। ইকোনমিকসে পাস করেও ওর বছর গড়ায় এমনিতে। কী করবে তা নিয়ে এখনো ভাবছে তিরিশ ছুঁইছুঁই যুবক। জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেয়,
-দেখি কী করা যায়। চলছে তো, চলুক না।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে লেখালেখির বাতিক ওর। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। দিনাজপুরে গ্রামের বাড়িতে সহায়সম্পত্তি এত আছে যে, কয়েক জনম বসে বসে খেলেও শেষ হবে না। ঢাকায় ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে বাসা ভাড়া করে থাকে। পত্রিকায় কবিতা, গল্প লেখে আর বাপের পাঠানো টাকায় নিশ্চিন্ত জীবন কাটায়। প্রয়োজনহীন প্রয়োজনের জীবন কাটায়। আনন্দে।
অনিকেত মন্দিরার ঘরে ঢুকেই বলল,
-গত রাতে তোকে নিয়ে একটা কবিতা লিখেছি। শুনবি?
অনিকেতের অবিন্যস্ত চুল, ঝুল পাঞ্জাবি জিন্সে তাকে চেহারায় ক্লান্ত লাগলেও চোখ দুটো ঝকঝক করছিল আবেগ এবং উৎসাহে। মন্দিরা বলল,
-কবিতা শোনাতে এসেছিস? এতদিন পর? ঠিক আছে, বোস। আমাকে নিয়ে লিখেছিস, বাঃ! পড়, শুনি তোর কবিতা।
পকেট থেকে ভাঁজ করা কাগজটা বের করে পড়ার আগে অনিকেত চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকল মন্দিরার দিকে। মন্দিরাও তাকে দেখছিল কৌতূহলে। ভার্সিটিতে থাকতেও অনিকেত তাকে নিয়ে কবিতা লিখেছে। সে কবিতা শুনে ওরা সবাই হাসাহাসি করেছে। কিন্তু আজকের এ কবির ভাব আর সেই আগের মতো নয়। কেমন জানি অন্যরকম। অনিকেত পড়ল,
‘তোমার মতোন তুমি
তুমি নও আর কেউ তোমার মতোন’
পড়তে গিয়ে অনিকেতের গলা কাঁপছে। দুই লাইন পড়েই সে থেমে গেল। বলল,
-না থাক। এটুকুই। চা খাব। চা খাওয়া। চায়ের তেষ্টা পেয়েছে।
মন্দিরা লক্ষ করল, অনিকেত ফ্যানের নিচে বসে থেকেও হাতের তালুতে কপালের ঘাম মোছে। মুখ নিচু করে বসে থাকে। এরপর আর কোনো কথা বলে না। চা এনে দিলে দ্রুত খেয়ে চলে যাওয়ার সময় কী ভেবে দরজার কাছে একটু দাঁড়ায়। মন্দিরা জিজ্ঞেস করে,
-আর কিছু বলবি না? মুখ নিচু রেখেই অনিকেত বলল,
-নাঃ, আর কিছু না। ইচ্ছে হলো কবিতাটা তোকে পড়ে শোনাই। তাই এলাম। যাই।
এভাবে অনিকেত চলে যাওয়ার পরদিন এলো বারিষ। তার চকচকে নতুন গাড়ি। সে ঢাকার বনেদি ঘরের ছেলে। ঘরে ঢুকে আয়েশ করে সোফায় বসে চমৎকার একটা ঘড়ি উপহার দিল মন্দিরাকে। তারপর যেন পরিহাস করে বলল,
-জানিস মন্দিরা, মা আমার জন্য পাত্রী দেখছে।
শুনে মন্দিরা হাসতে হাসতে জবাব দিল,
-ভালোই তো, তাহলে মায়ের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করে ফেল যত তাড়াতাড়ি পারিস।
বারিষ মন্দিরার চোখে চোখ রেখে বলল,
-তাহলে আমার পছন্দের মেয়েটির কী হবে?
মন্দিরা চোখ বড় বড় করে বারিষকে কিছুক্ষণ দেখল। তারপর বলল,
-তোর পছন্দ আছে না কি? কই, বলিসনি তো কোনো দিন! জানিয়েছিস তাকে?
মন্দিরার এ প্রশ্নে বারিষ মুখ নিচু করে চুপ করে থাকে কিছু সময়। তারপর অনেক দূর থেকে যেন বলে,
-না। ভাবছি, বললে যদি সে ফিরিয়ে দেয়? মন্দিরা কলহাস্যে জবাব দেয়,
-দিলে দেবে। না-ও তো দিতে পারে। বলে তো দেখবি একবার।
মন্দিরা উৎসাহ দেখালেও বারিষ কেন জানি ম্রিয়মাণ জবাব দেয়, না থাক।
এরপর আর দুজনের কোনো কথা হলো না। অন্য দুজনের মতো একই তাড়ায় চা খেয়ে বিদায় নিল বারিষ।
চার
মানুষের কোনো কোনো ইচ্ছা পূরণ হয়। অপূর্ণ থাকে না।
মন্দিরা চেয়েছিল যেমন, তেমন। তার মনের মতো করে সত্যি সত্যিই একদিন প্রপোজ করে একজন।
সে দিনটি ছিল মন্দিরার জন্মদিন। প্রিয়ম, অনিকেত, বারিষ তিনজনকেই সে মোবাইলে দাওয়াত দিল। আর যা কেউ করে না সাধারণত, তা-ই সে করল। ফোনে মন্দিরা ওদের বলল,
মন্দিরার এমন করার পেছনে কী উদ্দেশ্য কাজ করেছে তা শুধু সে-ই জানত। আর জানত ওর বিধাতা। কেননা, এমন তো নয় যে সে লোভী, তার চাহিদা অনেক।
না, তা সে নয়। মন্দিরা তার বাবা-মায়ের একমাত্র কন্যা। দুজনই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক। তাঁরা রুচিমান, দেশি সংস্কৃতিচর্চায় এঁদের বংশপরম্পরায় ভালোবাসা আছে। মেয়ের ইচ্ছে-অনিচ্ছাকে তাঁরা মূল্য দেন। স্বাধীনতা আছে মন্দিরার নিজের পাত্র পছন্দ করার। তাঁদের নিজেদেরও বিয়ে প্রেমের। তো সেখানে মেয়ের বাবা-মা এটাই মানেন, যার যার জীবন তার তার।
মন্দিরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে ইংরেজিতে। পরীক্ষায় যে ফল ওর, তাতে যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। সেই মেয়ের তো নিজের জন্মদিনে এভাবে উপহার চাওয়ার কথা না। তবু সে তা-ই করেছে।
আর মন্দিরার জন্মদিনে দাওয়াতি মাত্র ওর তিন বন্ধুই। আর কেউ না।
সেদিন সন্ধ্যায় যথাসময়ে এলো প্রিয়ম আর বারিষ। অনিকেতের দেখা নেই।
প্রিয়ম মন্দিরার জন্য নিয়ে এসেছে দামি জুয়েলারি সেট। বারিষ প্যারিস থেকে ওর ইঞ্জিনিয়ার বাবার হাতে আনা দামি কসমেটিকস বক্স। দুটো উপহারই দামি এবং পছন্দ করার মতো। ওরা কেক কাটার আগে অনিকেতের অপেক্ষায় চা খায়। এদিকে বন্ধুর কোনো খবর নেই।
মন্দিরা অনিকেতকে ফোন করে। যান্ত্রিক কণ্ঠে কেউ একজন ওপাশ থেকে বলে,
...আরেকবার চেষ্টা করুন।
অপেক্ষায় অপেক্ষায় মন্দিরাও যখন খুব অস্থির, রাতও বাড়ছে, এ সময় একটা সিএনজি বিকট আওয়াজ তুলে মন্দিরার বাসার সামনে হাজির। ওরা তিনজনেই দেখল, অনিকেত খুব যত্নের সঙ্গে তিনটি গোলাপ ফুল গাছের টব এনে মন্দিরার এক চিলতে ব্যালকনির বাগানে রাখল। একটি টবের গোলাপ গাছে সদ্য গজিয়ে ওঠা একটি কলি। দ্বিতীয় টবটিতে লাল গোলাপের বড় একটি আধফোটা কলি আর তৃতীয় টবে একটি বড় টকটকে লাল গোলাপ ফুটে আছে। টবগুলো অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে বারান্দায় রেখে অনিকেত লজ্জিত হাসল। গভীর চোখে মন্দিরার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
-এদের খুঁজতে খুঁজতে দেরি হয়ে গেল মন্দিরা। উপহার পছন্দ হয়েছে তোর?
বিহ্বল মন্দিরা মাথা নাড়ে। মুখে কিছু বলে না। সে জানে সব কথা বলা লাগে না। অনিকেতের আনা এ উপহারের অর্থ জেনেও সে তাকে বলে,
-কবি, এবার তুই বুঝিয়ে দে, তোর উপহারের অর্থ কী।
অনিকেত গাঢ় স্বরে কথা বলে, আর ওকে ঘিরে ধরা তিনজন শোনে,
-দ্যাখ, প্রথম গোলাপের গাছটিতে আছে শুধু একটি কলি, তার মানে হলো, কবিতার ভাষায়, যা বলা হয়নি। দ্বিতীয় টবের গোলাপ গাছটিতে আছে আধফোটা কলি, তার অর্থ হলো, কথাটি বলার অপেক্ষায় আছে। আর তৃতীয়টিতে পূর্ণ ফোটা গোলাপ, তার মানে হলো, না-বলা কথাটা এখানে বলা হয়ে গেছে।
মন্দিরা অনিকেতের হাত ধরে পাশে টেনে এনে বলে, বুঝেছি। এবার আয়, সবাই মিলে কেক কাটি।
প্রিয়ম আর বারিষ বোঝেনি কিছুই। রাতে খেয়েদেয়ে ওরা দুজন চলে যাওয়ার পরও মন্দিরার চোখের ইশারায় অনিকেত ছিল আরও কিছুক্ষণ। কথা হলো, কথা হলো না। বয়সি রাতে বিদায় দেওয়ার সময় মন্দিরা অনিকেতকে বলল, তোর হাতটা দে।
কথাটা শুনে রুদ্ধশ্বাসে অনিকেত তাকিয়ে থাকল মন্দিরার মুখের দিকে। অস্ফুট উচ্চারণ করল, নিবি?
মন্দিরা স্মিতমুখে মাথা নাড়ে। অনিকেত ওর ডান হাতটা বাড়িয়ে দেয় মন্দিরার দিকে, নে তাহলে।