স্বাস্থ্য খাতে সিন্ডিকেট করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারে জড়িত আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার বিরুদ্ধে ৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি জানান, লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইস ও টেকনোক্রেট নামে প্রতিষ্ঠানের মালিক মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু কৃষি জমি ক্রয়, জমি লিজ, প্লট, ফ্ল্যাট ও বাড়ি নির্মাণে মোট ১৮ কোটি ৪০ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানিতে শেয়ার ও বিনিয়োগ, গাড়ি ক্রয়, ব্যাংক হিসাবের স্থিতি, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী মিলিয়ে মিঠুর আরও ৫৭ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার ২৩৮ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৫ কোটি ৮৫ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৮ টাকা।
দুদক সূত্র জানায়, মিঠুর নামে পারিবারিক ব্যয়ের পরিমাণ পাওয়া গেছে ৭১ কোটি ৪৫ লাখ ১৪ হাজার ৪৩৪ টাকা। অর্থাৎ পারিবারিক ব্যয়সহ তার মোট সম্পদ ও ব্যয়ের হিসাব দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪৭ কোটি ৩০ লাখ ৪৬ হাজার ১৭২ টাকা। ব্যবসা, বাড়িভাড়া, কৃষি আয়, বেতন-ভাতা, ফার্মের অংশ, ব্যাংক সুদ, নিরাপত্তা জামানতের সুদ এবং বৈদেশিক রেমিট্যান্স থেকে মিঠুর বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া গেছে ৭১ কোটি ৪৯ লাখ ৬৮ হাজার ৭৩৫ টাকা। ফলে দেখা যায়- তিনি জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে প্রায় ৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগদখল করেছেন।
২০১৬ সালে প্রকাশিত বহুল আলোচিত পানামা পেপারসে যেসব বাংলাদেশির নাম এসেছিল, তাদের মধ্যে ছিলেন ঠিকাদারি ব্যবসায়ী মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু। তার মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন মালামাল সরবরাহ ও উন্নয়নকাজের নামে প্রভাব খাটিয়ে তিনি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।