বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলার মাধ্যমে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও ফ্যাসিবাদমুক্ত রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে এক বিশেষ গোলটেবিল আলোচনায়। রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বুধবার বিকেলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিজ (সিপিএস) ও ইউনিভার্সিটি স্টাডি ফোরাম (ইউএসএফ)।
সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ড. এম আবদুল আজিজ। আলোচনায় অংশ নেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল আমিন ব্যাপারী এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফজলে ইলাহি।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, "রাজনৈতিক অঙ্গনকে দুর্বৃত্ত মুক্ত করতে হবে। স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী না হলে রাজনীতি টাকার খেলায় পরিণত হয়। একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান ও সরকার প্রধান হলে সে দানব হয়ে ওঠে, এটি পদ্ধতিগত ত্রুটির ফল।"
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সচিব (অব.) মো. সফি উল্লাহ, রাওয়া ক্লাবের চেয়ারম্যান কর্নেল আব্দুল হক, বিআইআইএসএস-এর সাবেক গবেষণা পরিচালক কর্নেল (অব.) জেড আর এম আশরাফ উদ্দিন, ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব মো. মিরাজ মিয়া এবং সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মো. তালহা।
আলোচকরা বলেন, এখনো প্রশাসন ও সচিবালয়কে ফ্যাসিবাদমুক্ত করা সম্ভব হয়নি। জাতীয় ঐকমত্য গঠনে একটি সমন্বিত রোডম্যাপ প্রয়োজন। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের দ্রুত বিচারের জন্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানানো হয়।
তারা আরও বলেন, গুম, খুন ও গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া দৃশ্যমান করতে হবে। সংবিধান এমনভাবে সংস্কার করতে হবে যাতে কেউ দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারে এবং আত্মীয়স্বজনকে ক্ষমতায় আনতে না পারে।
নির্বাচনী ব্যবস্থায় সংস্কার আনার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, যাচাই-বাছাই করে নিষ্ক্রিয় দলগুলোর নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। অঞ্চলভিত্তিক দল গঠনের সুযোগ দিতে হবে এবং সব প্রার্থী ও দলের নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।
আলোচনায় দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, গবেষক, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও সমাজিক নেতারাও অংশ নেন।
বিডি প্রতিদিন/মুসা