কাউফল একটি অপ্রচলিত, টক স্বাদের মৌসুমি ফল। আমাদের গ্রামবাংলায় এটি নানা নামে পরিচিত। যেমন: কাউয়া, কাগলিচু, তাহগালা, ক্যাফল, কাউগোলা বা পাঁচদানা। এর গাছ মাঝারি আকারের হয়, পাতা ও ডালপালা কম থাকলেও উপরের দিকে ঘন ঝোপের মতো বাড়ে।
সাধারণত বাড়ির পেছনের ঝোপঝাড় বা পরিত্যক্ত জায়গায় এই গাছ দেখা যায়। কাঁচা অবস্থায় কাউফল সবুজ, আর পাকলে হয়ে যায় হলুদ বা কমলা রঙের। এর ভিতরে থাকে ৪-৫টি বিচি, সেজন্য অনেকে একে পাঁচদানা ফল বলেও ডাকেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ চীন, লাওস, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামেও এই গাছ দেখা যায়।
কাউফল শুধু স্বাদেই নয়, গুণেও ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম কাউফলে থাকে শক্তি, ফাইবার, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, আয়রন, ফ্যাট, শর্করা, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়াম, জিংক, কোলেস্টেরল। এতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীর থেকে ক্ষতিকর ফ্রি-র্যাডিকেল দূর করে এবং ভাইরাল ফ্লু প্রতিরোধে সাহায্য করে।
অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা
মাড়ির রোগ প্রতিরোধে
কাউফলে থাকা পুষ্টিগুণ মাড়ির সংক্রমণ প্রতিরোধ করে ও মাড়িকে শক্ত করে। নিয়মিত খেলে উপকার মেলে।
মুখের অরুচিভাব দূর করতে
হঠাৎ করে মুখে রুচি না থাকলে কাউফল খেতে পারেন। এটি খাওয়ার ফলে জিভে জমে থাকা ভাইরাস প্রলেপ দূর হয় এবং রুচি ফিরে আসে।
অপুষ্টিজনিত সমস্যা মোকাবেলায়
শিশুদের অপুষ্টি বা শরীরের ভারসাম্যহীনতায় কাউফল খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়।
ঠাণ্ডা ও কফে উপকারী
ভিটামিন সি থাকায় ঠাণ্ডা লাগলে কাউফল কফ কমাতে ও শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
আমাশয় সারাতে সাহায্য করে
কাউফলে থাকা ফাইবার ও জিংক হজমে সহায়তা করে এবং পেট পরিষ্কার রাখে।
মাথাব্যথা বা মাথাধরা কমায়
নিয়মিত কাউফল খেলে মাথাধরা বা মাথার ভারভাব দূর হয়।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকায় কাউফল বর্ষাকালে বিভিন্ন ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কাজ করে।
খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণে
গ্রামবাংলায় প্রচলিত, কাউফল ও তার গাছের ছাল সেদ্ধ করে খেলে খিঁচুনি রোগে উপকার মেলে। এটি একটি প্রাচীন ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি।
হার্ট ও রক্তচাপে উপকারী
এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ