ইরানে অবস্থানরত অবৈধ আফগান অভিবাসীদের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা আজ শেষ হচ্ছে। শনিবার (৫ জুলাই) দেশটির সরকার জানায়, রবিবার (৭ জুলাই) এর মধ্যে যারা ইরান না ছাড়বে, তাদের গ্রেপ্তার করে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো হবে। খবর আল জাজিরা।
ইরান সরকার ২০২৩ সাল থেকেই বৈধ কাগজপত্র না থাকা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। চলতি বছরের মার্চে জানানো হয়, ৭ জুলাইয়ের মধ্যে সবাইকে স্বেচ্ছায় দেশ ত্যাগ করতে হবে, অন্যথায় তাদের বহিষ্কার করা হবে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, শুধু জুন মাসেই ২ লাখ ৩০ হাজার আফগান ইরান ছেড়ে গেছেন। পুরো সময় ধরে ইতোমধ্যেই প্রায় ৭ লাখ আফগান ফিরে গেছেন। তবে এখনো লাখো মানুষ বহিষ্কারের ঝুঁকিতে আছেন।
ইরানে বর্তমানে অর্থনৈতিক সংকট, কর্মসংস্থান ঘাটতি এবং ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা উদ্বেগ বেড়েছে। বিশেষ করে ইউরেনিয়াম স্থাপনায় হামলার পর ইরান সরকার কঠোর অবস্থানে যায়।
ইরানের সরকারি মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি বলেন, “আমরা সবসময় অতিথিপরায়ণ ছিলাম। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা এখন আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। যেসব মানুষ অবৈধভাবে অবস্থান করছেন, তাদের অবশ্যই ফিরে যেতে হবে।”
এদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থা এই সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে। তারা বলছে, এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে হঠাৎ ফেরত পাঠানো হলে আফগানিস্তানে মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে।
একজন আফগান রেস্তোরাঁ মালিক বাতুল আকবারি বলেন, “আমরা এখানে জন্মেছি, এটাই আমাদের ঘর। অথচ এখন আমাদের তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে এমন একটি দেশে, যাকে আমরা ঠিকভাবে চিনিও না।”
আরেক আফগান শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নাসিম মাজাহেরি জানান, “এই গণবহিষ্কার আমাদের পরিবারগুলোকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে।”
আল জাজিরার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সামাজিক ক্ষোভের জন্য অনেক ইরানি নাগরিক আফগান অভিবাসীদের দায়ী করছেন। ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার পর কিছু আফগানকে গুপ্তচরের সন্দেহেও দেখা হচ্ছে, যা সামাজিক মাধ্যমে ঘৃণার পরিবেশ তৈরি করেছে।
সূত্র: আল জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/আশিক