সিলেটে আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টা ১৯ মিনিট ৩ সেকেন্ডে ৪ মাত্রার এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সুনামগঞ্জের ছাতকে। সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সজীব হোসেন জানিয়েছেন, মৃদু এ ভূমিকম্পে কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। এরআগে ১৪ সেপ্টেম্বর সিলেটে আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তবে ৫ দশমিক ৮ মাত্রার সে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামের উদালগুড়ি জেলায়। ঘন ঘন এমন ভূমিকম্প সিলেটবাসীর মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিলেট শুধু বাইরের ভূমিকম্পের প্রভাবে কাঁপছে না, বরং স্থানীয় উৎপত্তিস্থলগুলোও বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে। ১৪ সেপ্টেম্বর আসামের উদালগুড়ির ভূমিকম্পটি ছিল কপিলি ফল্টের। এ কপিলি ফল্টও দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে। উদালগুড়ি থেকে শুরু হয়ে ভুটান সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত এ ফল্ট সিলেট থেকে মাত্র ১৯০ থেকে ২২০ কিলোমিটারের মধ্যে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পুর ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুশতাক আহমেদ মনে করেন, ডাউকি ফল্ট সিলেটের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া সিলেটের মাটির নিচে থাকা ফল্ট লাইনগুলো বড় ধরনের ভূমিকম্প ডেকে আনতে পারে। তার মতে, বাইরের ঝুঁকি যেমন আছে, তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো স্থানীয় সক্রিয় ফল্টগুলো। এ অঞ্চলের ভূতাত্ত্বিক গঠন এমন যে, মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পও এখানে ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ডাউকি ফল্টকে আমরা অনেক দিন ধরে পর্যবেক্ষণ করেছি, এটা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু কপিলি ফল্টে বিপুল শক্তি জমে আছে। ভবিষ্যতে বড় ভূমিকম্প হলে সিলেটের অবকাঠামো ও মানুষের জীবন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে। সিলেটের ভূতাত্ত্বিক গঠন অনুযায়ী, সুরমা বেসিনের নিচ দিয়ে কয়েকটি ফল্ট লাইন বিস্তৃত। এর মধ্যে রয়েছে সিলেট ফল্ট, সুরমা ফল্ট, ডাউকি ফল্ট, আটগ্রাম-ভৈরব লাইনামেন্ট এবং চট্টগ্রাম-ত্রিপুরা ফোল্ড বেল্ট।