বিশ্বব্যাপী পরিচালিত গবেষণা জরিপে উদ্ঘাটিত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার ১৭ দেশে অসহনীয় দাবদাহের কারণে তথা জলবায়ু পরিবর্তনের অশুভ প্রতিক্রিয়ায় নারীদের মধ্যে স্তন, ডিম্বাশয় ও জরায়ুর ক্যানসার বেড়েছে। একইভাবে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হারও বেড়েছে গত দুই দশকে। ‘ফন্ট্রিয়ার্স ইন পাবলিক হেল্থ’ জার্নালে গতকাল প্রকাশিত জরিপ রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, অত্যধিক গরম আবহাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে খরা এবং দাবানলের প্রকোপও বেড়েছে। যে কারণে পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ছে আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।
এ জরিপ পর্যালোচনার পর ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার ম্যাসনিক ক্যানসার সেন্টারের জনস্বাস্থ্যবিষয়ক অধ্যাপক আইরিনা স্টিপ্যানোভ বলেছেন, উত্তপ্ত আবহাওয়া এবং পরিবেশ দূষণের ফলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। আর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন নারীরা। কারণ ওই সব দেশের দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীর নারীরা প্রত্যাশিত চিকিৎসাসেবা পান না। এমনকি পরিবেশ দূষণের ভয়ংকর প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির কার্যক্রমও তেমনভাবে নেই ওই সব অঞ্চলে।
কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির সিনিয়র ফেলো গবেষক এবং এ জরিপের আলোকে পরিচালিত গবেষণা টিমের অন্যতম ড. ওয়াফা আবেলখেইর মাতারিয়া মনে করছেন, ওই সব অঞ্চলের নারীরা সামাজিকভাবেও পিছিয়ে রয়েছেন অর্থনৈতিক কারণে। এহেন অবস্থার অবসানে গরিবের চেয়েও গরিব অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে পরিবেশ দূষণের ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। অন্যথায় ক্যানসারের মহামারি রোধ করা সম্ভব হবে না।
১৯৯৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের নিয়ে উপরোক্ত গবেষণা জরিপে আরও উদ্ঘাটিত হয়েছে প্রতি লাখে ১৭৩ থেকে ২৮০ জনে উন্নীত হয়েছে ক্যানসারে আক্রান্তের ঝুঁকি। কাতার, বাহরাইন, জর্ডান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিরিয়ার মতো দেশেও নারীরা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে সুচিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করছেন বলে ওই জরিপে জানা গেছে।